পাতা:বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের শ্রেষ্ঠ গল্প.pdf/১২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SSR8 বিভতিভষণের শ্রেষ্ঠ গল্প তান্ত্রিক শানেছি। তারানাথের সর্বভাবই ভালো সাধা-সন্ন্যাসী সন্ধান করিয়া বেড়ানোবিশেষ করিয়া সে সাধ, যদি আবার তান্ত্ৰিক হয় তবে তারানাথ সন্ধব কন্ম ফেলিয়া তাহার পিছনে দিনরাত লাগিয়া থাকিবে । গেলাম বেলেঘাটা। সাধার ক্ষমতার মধ্যে দেখিলাম, তিনি আমাকে যে কোন একটি গন্ধের নাম করিতে বলিলেন, আমি বেলফলের নাম করিতে তিনি বলিলেন-পকেটে রুমাল আছে ? বার করে দেখ । রামাল বার করিয়া দেখি তাহাতে বেলফলের গন্ধ ভুর ভুর করিতেছে । আমি সাধার নিকট হইতে পাঁচ-ছয় হাত দরে বসিয়াছি এবং আমার পকেটে কেহ হাত দেয় নাই । ঘরে আমি, তারানাথ ও সাধা ছাড়া অন্য কেহই নাই, রােমালখানাতে আমার নামও লেখা-সতরাং হাত সাফাইয়ের সম্ভাবনা আদৌ নাই । কিছ আশ্চয্য না হইলাম। এমন নয়, কিন্তু যদি ধরিয়াই লই সাধবাবাজী তান্ত্রিক-শক্তির সাহায্যেই আমার রামালে গন্ধের সম্মিট করিয়াছে, তবও এত কষ্ট করিয়া তন্ত্রসাধনার ফল যদি দাই পয়সার আতর তৈরি করায় দাঁড়ায়, সে সাধনার আমি কোন মাল্য দিই না । আন্তর তো বাজারে কিনিতে পাওয়া যায়। ফিরিবার সময় তারানাথ বলিল--নাঃ, লোকটা নিম্পন্ন শ্রেণীর তন্ত্রসাধনা করেছে, তারই ফলে দ্য-একটি সামান্য শক্তি ፲ዏ{ር፰፻፲፪ ! তাই বা পায় কি করিয়া ? বৈজ্ঞানিক উপায়ে কৃত্ৰিম আন্তর প্রস্তুত করিতেও তো অনেক তোড়জোড়ের দরকার হয়, মহন্তের মধ্যে একজন লোক দর হইতে আমার রামালে যে বেলফলের গন্ধ চালনা করিল-তাহার পিছনেও তো একটা প্রকাশন্ড বৈজ্ঞানিক অসম্ভাব্যতা রহিয়াছে । Contact at a distance-এর মোটা সমস্যাই ওর মধ্যে জড়ানো । যদি ধরি হিপনটিজম, সাধার ইচ্ছাশক্তি আমার উপর ততক্ষণ কায্যকরী হইতে পারে, যতক্ষণ আমি তাহার নিকট আছি । তাহার সান্নিধ্য হইতে দারেও আমার উপর যে হিপনটিজমের প্রভাব অক্ষািন্ন রুহিয়াছে, সে প্রভাবের মলে কি আছে, সেও তো আর এক গরতের সমস্যা হইয়া দাঁড়ায় । তারানাথের সঙ্গে তাহার বাড়িতে গিয়া বসিলাম । তারানাথ বলিল-তুমি এই দেখেই দেখছি। আশচয্য হয়ে পড়লে, তব তো সত্যিকার তান্ত্রিক দেখনি । নিম্নশ্রেণীর তন্ত্র এক ধরনের জাদ, যাকে তোমরা বল ব্ল্যাক ম্যাজিক । এক সময় আমি ও-জিনিসের চচ্চাঁ যে না করেছি তা নয় । ও আতরের গন্ধ আর এমন একটা কি । এমন সব ভয়ানক ভয়ানক তান্ত্ৰিক দেখেছি, শনলে পরে বিশ্ববাস করবে না। একজনকে জানতুম সে বিষ খেয়ে হজম করত । কিছদিন আগে কলকাতায় তোমরাও এ-ধরনের লোক দেখেছি। সালফিউরিক এসিড, নাইট্ৰিক এসিড খেয়েও বেচে গেল, জিবে একটা দাগও লাগল না। এসব নিৰ্শন ধরনের তন্ত্রচিচ্চা শক্তি, ব্ল্যাক-ম্যাজিক ছাড়া কিছু নয়। এর চেয়ে অদ্ভুত শক্তির তান্ত্ৰিক দেখেছি । কি হলো জানো ? ছেলেবেলায় আমাদের দেশে বাঁকুড়াতে এক নাম-করা