পাতা:বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের শ্রেষ্ঠ গল্প.pdf/১৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তারানাথ তান্ত্রিকের গল্প NRA পরিষ আগে আমাদেরই বংশে রােমরােপ সান্যাল নদীর ধারে ঐ মন্দির প্রতিস্ঠা করেন। রামরোেপ সাধক পরিষ ছিলেন, বিবাহ করেছিলেন । ছেলেমেয়েও হয়েছিল। কিন্তু সংসারে তিনি বড় একটা লিপ্ত ছিলেন না। রামরাপের বড় ভাই ছিলেন রামনিধি, প্রথম যৌবনেই অবিবাহিত অবস্থায় তিনি সন্ন্যাসী হয়ে গহত্যাগ করেন, আর কখনও দেশে ফেরেন নি। অন্তত দেড়শ বছর আগের কথা হবে { জিজ্ঞাসা করলাম, ঐ শিবমন্দিরটা ওরকম মাঠের মধ্যে বেখাপা জায়গায় কেন ? --তা নয় । ওখানে তখন বহতা নদী ছিল । খাব স্রোত ছিল, বড় বড় কিস্তী চলতো, কোন নৌকা একবার ওই মন্দিরের নীচের ঘাটে মারা পড়ে ব’লে ওর নাম-লা-ভাঙার খেয়াঘাট । প্রায় চীৎকার করে বলে উঠলাম-খেয়াঘাট ! তিনি অবাক হয়ে আমার দিকে চেয়ে বললেন-হ্যা, জ্যাঠামশায়ের মাখে শনেছি, বাবার মাখে শানেছি, তা ছাড়া আমাদের পরনো কাগজপত্রে আছে শিবমন্দির প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। লা-ভাঙার খেয়াঘাটের ওপর । কেন বল তো, এসব কথা তোমার জানিবার কি দরকার হলো ? বই-টই লিখছি নাকি ? ওদের কাছে কোন কথা বলিনি, কিন্তু আমার দািঢ় বিশ্ববাস হলো এবং সে বিশ্ববাস আজও আছে যে, কাশীর সেই সন্ন্যাসী রােমরাপের দাদা রামনিধি নিজেই। কোন অদ্ভুত যৌগিক শক্তির বলে দেড়শ বছর পরেও বেচে আছেন । বাড়ী থেকে কিছদিন পরে আবার সাধা-সন্ন্যাসীর সন্ধানে বেরোই । বীরভীমে এক গ্রামে শািনলাম। সেখানকার শামশানে এক পাগলী থাকে, সে আসলে খাব বড় তান্ত্ৰিক সন্ন্যাসিনী । পাগলীর সঙ্গে দেখা করলাম, নদীর ধারে শামশানে। ছোড়া একটা কাঁথা জড়িয়ে পড়ে আছে, যেমন ময়লা কাপড়চোপড় পরনে, তেমনি মলিন জটপাকানো চুল । আমাকে দেখেই সে গেল মহা সটে । বললে-বেরো এখান থেকে, কে বলেছে তোকে এখানে আসতে ? ওর আলাথাল বিকট মলিন চেহারা দেখে মনে যে ভাব এসেছিল, সেটাকে অতি কমেট চেপে বললাম--মা, আমাকে আপনার শিষ্য করে নিন, অনেক দর থেকে এসেছি । দয়া করেন আমার ওপর । পাগলী চে’চিয়ে উঠে বলল-পালা এখান থেকে। বিপদে পড়বি। আঙলে দিয়ে গ্রামের দিকে দেখিয়ে বললে-যা- নিজজন শামশান, ভয় হলো ওর মাত্তি দেখে, কি জানি মারবে-টারবে নাকি —পাগল মানষেকে বিশ্ববাস নেই। সেদিন চলে এলাম, কিন্তু আবার গেলাম। ৩ার পরদিন । পাগলী বললে--আবার কেন এলি ? বললাম। --মা, আমাকে দয়া করাপাগলী বললে-দর হ-দর হ, বেরো এখান থেকে-তারপর রেগে আমায় মারলে এক লাথি । বললে-ফের যদি আসিস, তবে বিপদে পড়ােব,