পাতা:বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের শ্রেষ্ঠ গল্প.pdf/১৫১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কনেদেখা সকালবেলা বৈঠকখানার গাছপালার হাটে ঘরছিলাম । গতমাসে হাটে কতকগলি গোলাপের কলম কিনেছিলাম, তার মধ্যে বেশির ভাগ পোকা লেগে নষ্ট হয়ে গেছে। নাসরির লোক আমার জানাশনো, ৩াদের বল্লাম-কি রকম কলম দিয়েছিলে হে। সে যে টবে বসাতে দেরি সাইল না । তা ছাড়া, ‘আবদল কাদের’ বলে বিক্ৰী করলে, এখন সবাই বলচে অবদল কাদের নয়, ও অত্যন্ত মামলী জাতের টী রোজ। ব্যাপার কি তোমাদের ? নাসারির পরেনো লোকটাই আজি আছে। সেদিন এ ছিল না, তাই ঠিকেছিলাম। এই লোকটা খাব অপ্রতিভা হলো । বলে-বাব, এই হয়েছে কি জানেন ? বাগানের মালিকেরা আজকাল আছেন কলকাতায় ! আমি একা সব দিকে দেখতে পারিনে, ঠিকে উড়ে মালী নিয়ে হয়েচে কাজ। তাদের বিশ্ববাস কল্লে চলে না, আবার না কল্লেও চলে না । আমি তো সবদিন হাট সামলাতে পারিনে বাব । ওদেরই ধরে পাঠাতে হয়, আমি গানে দিলাম টী রোজ তিন ডজন, আমি তো তার কাছ থেকে টী রোজেরই দাম নোবো ? এখানে এসে যদি আবদল কাদের বলে বিক্রি করে, তো তারই লাভ। বাড়তি পয়সা আমার নয়, তার ৷ বৰ্ব্বলেন না বাবা ? বাজার খাব জোঁকেছে। বষ্যর নওয়ালির মাখ, নানা ধরনের গাছের আমদানি হয়েচে । বড় বড় বিলিতি দোপাটি, মতিয়া, বেল, অতসীলতা, রাস্তার ধারের সারিতে নানা ধরনের পাম, ছোট ছোট পাম থেকে ফ্যান, পাম ও বড় টবে ভাল এরিকা পামও আছে। সােয্যমখী যদিও এ সমধ্য নয়, তব সংষ্যমখী এসেচে। অনেক। তা ছাড়া কলকাতার রাস্তায় অনভিজ্ঞ লোকদের কাছে অকি'ড বলে যা বিক্ৰী হয়, সেই নারকোলের ছোবড়া ও তার-বাধা ফান ও রঙীন আগাছা যথেস্ট বিক্ৰী হচে । লোকের ভিড়ও বেশ । হঠাৎ দেখি আমার অনেকদিন আগেকার পরোনো রামমেট হিমাংশ । ৭/৩ নং কানাই সরকারের লেনের মেসে তার সঙ্গে অনেকদিন এক ঘরে কাটিয়েচি । সে আজ সাত-আট বছর আগেকার কথা-তারপর সে কলকাতা ছেড়ে চলে যায়। আর তার কোনো খবর রাখিনি এতকাল । -এই যে হিমাংশ ! চিনতে পারো ? হিমাংশ চমকে পেছন ফিরে চাইলে এবং কয়েক সেকেণ্ড সবিস্ময়ে আমার দিকে চেয়ে থাকবার পরে সে আমায় চিনলে। হাত বাড়িয়ে এগিয়ে এল হাসিমখে । -আরে জগদীশবাব যে ! তারপর ? ওঃ, আপনার সঙ্গে একযোেগ পরেওঃ । তারপর, আছেন কেমন বলান ! আমি বল্লাম-তোমার গাছপালায় শখ দেখােচ এখনো আছে হিমাংশ, সেই মনে আছে, দ্যজনে কতদিন এখানে হাটে আসতাম ? হিমাংশ হেসে বল্লে-তা আর মনে নেই! সেই আপনি দাক্তিজলিঙের