পাতা:বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের শ্রেষ্ঠ গল্প.pdf/১৫৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মেঘ-মঃমার S66 ——এখানকার বিতারে পড়ি, তিন বছর আছি। আপনি মন্দিরে কতদিন থাকবেন ? -সে তোমাকে বলব। তুমি এরই মধ্যে একদিন যেও। প্রদ্যমান প্ৰণাম করে বিদায় নিল । সন্ধ্যা তখনও হয়নি ; মন্দিরটা যে ছোট পাহাড়ের উপর ছিল, তারই দােপাশের চাল রাস্তা বেয়ে মেয়েরা উৎসব থেকে বাড়ী ফিরছিল । প্রদানের চোখ যেন কার সন্ধানে একবার মেয়েদের ভিড়ের মধ্যে ইতস্ততঃ ধাবিত হলো, পবেই সে আবার তাদের পিছনে ফেলে দ্রািতপদে নামতে লাগল। আচাষ শীলাৱত অত্যন্ত কড়া মেজাজের মানষ, একেই তিনি প্রদাশেনর মধ্যে অন্যান্য ছাত্রদের চেয়ে বেশি চঞ্চলতা ও কৌতুকপ্রিয়তা লক্ষ্য ক'রে তাকে একটা বেশি শাসনের মধ্যে রাখতে চেন্টা করেন—তার উপর সে রাত ক’রে বিহারে ফিরলে কি আর রক্ষা থাকবে ? বাঁক ফিরতেই বা পাশের পাহাড়ের আড়ালটা সরে গেল। সেখানে সেদিকটা ছিল। খোলা । প্রদাফন দেখলে দরে নদীর ধারে মন্দিরটার চড়া দেখা যাচ্ছে । চডার মাথার উপরকার ছায়াচ্ছন্ন আকাশ বেয়ে ঝাপসা ঝাপসা পাখীর দল ডানা মেলে বাসায় ফিরছিল। আরও দরে একখানা সাদা মেঘের প্রান্ত পশ্চিমদিকের পড়ন্ত রোদে সিন্দরের মত রাঙা হয়ে আসছিল, চারিধারে তার শীতোক্তজবল মেঘের কচুলি হালকা ক’রে টানা । হঠাৎ পিছন থেকে প্রদানের কাপড় ধ’রে কে ঈষৎ টানলে । প্ৰদৰ্শন পিছন ফিরে চাইতেই যে কাপড় ধ'রে টেনেছিল তার চোখে কৌতুকের বিদ্যুৎ খেলে গেল । সে কিশোরী, তার দোলন-চাঁপা রং-এর ছিপছিপে দেহটি বেড়ে’ নীল শাড়ী ঘারিয়ে ঘারিয়ে পরা। নতুন-কোেনা একছড়া ফলের মালা তার খোঁপাটিতে, জড়ানো । প্রদর্শন বিস্ময়ের সরে ব’লে উঠল-কখন তুমি এসেছিলে, সনন্দা! আমি তোমাকে এত খাঁজলাম, কৈ দেখতে পেলাম না তো ? প্রথমটা কিশোরীর মািখ লতাজায় লাল হয়ে উঠল, ৩ার পরে সে একটি অভিমানের সরে বলল-আমাকেই খাজতে যেন এখানে এসেছিল আর কি ! যত রাজ্যের সাপড়ে আর বাজিকরদের মাখের দিকে চেয়ে চেয়ে ঘরেছিলে, সে আর আমি দেখিনি ? --সত্যি বলছি সনন্দা তোমাকে খাঁজেছি । নামবার সময় খজেছি, এর আগেও খাঁজেছি ; তুমি কাদের সঙ্গে এলে ? এমন সময় দেখা গেল একদল মেয়ে পাহাড়ের উপর থেকে সেই পথে নেমে আসছে। সনন্দার সেদিকে চোখ পড়তেই সে তখনি হঠাৎ প্রদর্শনকে পিছনে ফেলে দ্রািতপদে নামতে লাগল। পিছনেই একদল অপরিচিতা মেয়ে, এ অবস্থায় আর সনন্দার অনসরণ করা সঙ্গত হবে না ভেবে সে প্রথমটা খানিকক্ষণ চুপ করে দাঁড়িয়ে রইল, তারপর