পাতা:বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের শ্রেষ্ঠ গল্প.pdf/১৬৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

StS বিভতিভষণের শ্রেষ্ঠ গল্প মাঠ খাব বড়, পার হতে অনেকটা সময় লাগল। তারপর মাঠ ছাড়িয়ে বড় বনটা আরম্ভ হল। খাব ঘন বন, শাল দেবদার গাছের ডালপালা নিবিড় হয়ে জড়ােজড়ি ক’রে আছে, মধ্যে অন্ধকারও খাব ৷ পাছে রাত ভোর হয়ে যায়, এই ভয়ে সে খাব দ্রািতপদে যাচ্ছিল । যেতে যেতে তার চোখে পড়ল বনের মধ্যে এক স্থান দিয়ে যেন খানিকটা আলো বেরচ্ছে । প্রথমে সে ভাবলে, গাছের পাতার ফাঁক দিয়ে জ্যোৎসনা এসে পড়ে থাকবে, কিন্তু ভালো ক’রে লক্ষ্য করে দেখে সে বঝলে যে, সে আলো জ্যোৎস্নার আলোর মতন নয়, বরং কৌতুহল অত্যন্ত প্রবল হওয়াতে পথ ছেড়ে সে বনের মধ্যে ঢকে পড়ল। যে পিপল গাছের সারির ফাঁক দিয়ে আলো আসছিল, তার কাছে গিয়ে গাছের গাড়ির ফাঁক দিয়ে উকি মেরে প্রদর্শন অবাক হয়ে দাঁড়িয়ে রইল। একি ! একেই তো সে এইমাত্র মাঠের মধ্যে দেখেছে, এই সেই অপরােপ সন্দর নারী তো ! অদ্ভুত ! সে দেখলে যাঁকে এইমাত্র মাঠের মধ্যে দেখেছে সেই অপরাপ দ্যুতিশালিনী নারী বনের মধ্যে চারিধারে ঘরে বেড়াচ্ছেন। জোনাকি পোকার হল থেকে কেমন আলো বার হয় তাঁর সমস্ত অঙ্গ দিয়ে তেমন এক-রকম সিনথোক্তজবল আলো বেরচ্ছে, অনেকদর পয্যন্ত বন সে আলোয় উক্তজবল হয়ে উঠেছে। আর একটি নিকটে গিয়ে সে লক্ষ্য করলে, তাঁর আয়ত চক্ষ, দটি অন্ধনিমীলিত, যেন কেমন নেশার ঘোরে তিনি চারিপাশে হাতড়ে পার হবার পথ খাঁজে বেড়াচ্ছেন, কিন্তু তা না পেয়ে পিপল গাছগালোর চারিধারে চক্রাকারে ঘরেছেন, তাঁর মািখশ্ৰী অত্যন্ত বিপন্নার মত । প্রদাশেনর হঠাৎ বড় ভয় হলো । সে ভাবলে মাঠে সরস্বতী দেবীর দর্শন থেকে আর এ পয্যন্ত সমস্ত ঘটনাটা আগাগোড়া ভৌতিক, এই নিশীথ রাত্রে শালের বনে নইলে একি কান্ড ! সে আর সেখানে মোটেই দাঁড়াল না । বন থেকে বার হয়ে দ্রুত হাঁটতে হাঁটতে যখন সে বিহারের উদ্যানে এসে পৌছল, মলান চাঁদ তখন কুমারশ্রেণীর পাহাড়ের পিছনে অস্ত যাচ্ছে । ভোর রাত্ৰে শয্যায় শয়ে ঘামিয়ে পড়ে সর্বপ দেখলে-ভদ্রাবতীর গভীর কালো জলের তলায় রাতের অন্ধকারে কে এক দেবী পথ হারিয়ে ফেলেছেন ; তিনি যতই উপরে ওঠবার চেষ্টা পাচ্ছেন, জলের ঢেউ তাঁকে ততই বাধা দিচ্ছে, নদীর জলে তাঁর অঙ্গের জ্যোতি ততই নিবে আসছে, অন্ধকার ততই তাঁর চারিপাশে গাঢ় হয়ে আসছে, নদীর মাছগলো। তাঁর কোমল পা দহখানি ঠােকরে রক্তাঙ্ক ক’রে দিচ্ছে - ব্যথিতদেহা, বিপন্না, বেপথমতী দেবীর দঃখ দেখে একটা বড় মাছ দাঁত বার ক’রে হিংস্ৰ হাসি হাসছে, মাছটার মািখ গায়ক সরদাসের মত ! প্রদর্শন ভোরে উঠেই আচাৰ্য্য পণবন্ধনের কাছে গিয়ে সরদাসের সঙ্গে প্রথম দেখার দিন থেকে গত রাত্ৰি পয্যন্ত সমস্ত ব্যাপার খালে বললে । আচায্য