পাতা:বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের শ্রেষ্ঠ গল্প.pdf/১৬৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SR98 বিভতিভষণের শ্রেষ্ঠ গল্প বরই দেন। তার পর দেবী যখন গণাঢ্যকে বর প্রার্থনার কথা বলেন, তখন সে দেবীর রাপে মািখ হয়ে তাঁকেই প্রার্থনা করে বসে। সরস্বতী দেবী বলেছিলেন, তাঁকে পাওয়া নিগণের কাজ নয়, সে নামে গণাঢ্য হলেও কাৰ্য্যত তার এমন কোনো কলাতেই নিপণতা নেই যে তাঁকে পেতে পারে, কিন্তু সেজন্য অনেক জীবন ধ’রে সাধনার প্রয়োজন। সরস্বতী দেবী অন্তহিতা হওয়ার পর মািখ গণাঢ্যের মোহ আরও বেড়ে যায়, আর সেই সঙ্গে সঙ্গে দেবীর উপর তার অত্যন্ত রাগ হয়। সে তন্ত্রোন্তু মন্ত্রবলে দেবীকে বন্দিনী করবার জন্যে উপযক্তি তান্ত্রিক গাের খাজতে থাকে । আমি জানি সে এক সন্ন্যাসীর কাছে তন্ত্রশাস্ত্রের উপদেশ নিত। সন্ন্যাসী কিছুদিন পরে তার তন্ত্রসাধনার হীন উদ্দেশ্য বৰ্ব্বতে পেরে তাকে দরি করে দেন । এসব কথা এদেশের সকল প্রাচীন লোকেও জানেন। আমি অনেকদিন তারপর গণাঢ্যের আর কোনও সংবাদ জানতাম না । ভেবেছিলাম। সে এদেশে থেকে চলে গিয়েছে। কিন্তু এখন তোমার কথা শনে আমার মনে হচ্ছে কাল রাত্রে সে কৃতকাৰ্য্য হয়েছে বোধ হয় । এতদিন ঐ উদ্দেশ্যেই সে কোথাও তন্ত্রসাধনা করছিল। যাক, তুমি এখনি গিয়ে সন্ধান করো মন্দিরে সে আছে কি না, থাকে। যদি সুনামসংবাদ দিও । প্রদর্শন সেখানে আর এক মহত্তও দাঁড়াল না । সে ছটে গিয়ে বিহারের উদ্যানে পড়ল। তখন রোদ বেশ ফটে উঠেছে ; বিহারের পাঠাথীদের সমবেত কন্ঠের স্তোত্ৰ-গান তার কানে আসছিল ৪ যে ধৰ্ম্মমা হেতুপপভবা তেসং হেতুং তথ্যাগতো আহ তেসgে যে নিরোধে এবং বাদী মহাসমানো যেতে যেতে সে দেখলে উদ্যানের এক প্রান্তে একটা বড় জামগাছের ছায়ায় চিত্রকর ভিক্ষ বসব্রত হরিণচন্মের আসনে বসে বোধ হয় কি অাঁকছেন, কিন্তু তাঁর মাখে অতৃপ্তি ও অসাফল্যের একটা চিহ্ন অকা । প্ৰদৰ্শন যা ভেবেছিল তাই ঘটল । মন্দিরে গিয়ে সে দেখলে-সেখানে কেউ নেই, গণিাঢ্য তো নেই-ই, সেই আজীবক সন্ন্যাসী পযন্তও নেই। দু-একটা যাবাগ পানের ঘাট, আগন জনােলাবার জন্যে সংগহীত কিছল শকিনো কাঠ মন্দিরের মধ্যে এদিক-ওদিক ছড়ানো পড়ে আছে । সেইদিন গভীর রাত্রে প্রদর্শন কাউকে কিছ না বলে চুপি চুপি বিহার পরিত্যাগ করলে । তার পর এক বৎসর কেটে গিয়েছে । বিহার পরিত্যাগ করবার পর প্রদর্শন একবার কেবল সনন্দার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বলেছিল, সে বিশেষ কোন কাজে বিদেশে যাচ্ছে, শীঘ্রই ফিরে আসবে । এই এক বৎসর সে কাণী, উত্তর কোশল ও মগধের সমস্ত স্থান খাজেছে, কোথাও গণিজ্যের সন্ধান পায়নি।