পাতা:বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের শ্রেষ্ঠ গল্প.pdf/১৯৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নাস্তিক N SV) এই ত্ৰিপট্টটি পথিতে ভরা থাকত ; ষড়দর্শন, উপনিষদ, বেদ, সমিতি, পরাণ, আশবলায়ন ও আপস্তম্ববাদি সত্ৰ, পাণিনি ও অন্যান্য বৈয়াকরণদের গ্রন্হ, সংহিতা ও নানা কোষকারদের পথি, প্রাচীন জ্যোতির্বিদন্দিগের কিছু কিছ: পkiথ, ইত্যাদি । তা ছাড়া আরও নানাপ্রকার পথি ঘরের মেঝেতে এমন ঘদচ্ছিাক্ৰমে ছড়ানো প’ড়ে থাকত যে, কুটীরের মধ্যে পা রাখবার স্থান পাওয়া দক্ষ কর । প্রতিদিন প্রাতঃকালে সনান করেই লোকনাথ কুটীরের সামনে প্রাচীন নিম গা2টার ছায়ায় গিয়ে বসতেন এবং একমনে পড়তেন । এক একদিন অবসন্ন গ্ৰীস্ম-অপরাহু ঈষত্তপ্ত বাতাসের সঙ্গে সদ্য-ফোটা নিমফলের পরাগ মাখিয়ে এক অপােব লোকের সলিট করত, সেখানে শব্ৰুকেশ অষ্যভট্ট শিষ্য শকটায়নকে নীলশন্যে খড়ি একে গ্ৰহনক্ষত্রের সংস্থান উপদেশ কপতেন, বানো পাখীয় অশ্রান্ত কাকলীর মধ্যে সাসক ভাষাতত্ত্ব আলোচনায় ব্যান্তে থাকতেন, দৰে বধ্যি জ্যামিতিক সমস্যার সামনে পড়ে সেখানে কুণ্ডিতললাট পরাশর ৩াঁর অন্যমনস্ক দলিট অত্যন্ত একমনে সক্ষমখস্থ বালীক১৩াপের দিকে আবদ্ধ ক’রে রাখতেন-চমক ভেঙে উঠে লোকনাথের কাছে এ৮াও একটা কম সমস্যার বিষয় হয়ে উঠ৩ না যে, কেন তিনি এতক্ষণ মনে মনে ভাষাতত্ত্ব আলোচনাকারী যাসোিকর মখকে সম্পমখস্থ নদীজলে সন্তরণকারী বন্য হংসের মাখের মত কলপনা করেছিলেন ! রাত্রে আকাশের নক্ষত্ৰগলোর দিকে চেয়ে চেয়ে লোকনাথ ভাবতেন, ওগালো কি ? প্রাচীন জ্যোতিবিদগণের পথি এখানে তাঁকে বড় সাহায্য করত না । অবশেষে তিনি নিজে ভেবে ভেবে স্থির করলেন নক্ষত্রসমােহ এক প্রকার বহৎ স্ফটিক পিন্ড। পথিবীতে আলো দেওয়ার জন্যে এগালো আকাশে আছে, চন্দ্রকে তিনি নক্ষত্রদের অপেক্ষা ব্যহত্তর সাফটিক পিন্ড ব’লে ভেবেছিলেন। তাঁর মাতৃত্যুর পর তাঁর সবহিস্তলিখিত একখানি পথিতে দেখা যায়, তিনি গ্রহ-নক্ষত্র সংক্ৰান্ত তাঁর এ মতবাদ লিপিবদ্ধ ক'রে রেখে গিয়েছেন। তাদের আলোর উৎপত্তি সম্বন্ধে লোকনাথ লিখেছিলেন যে, পথিবীতে সাফটিক প্রস্তরের যে শ্রেণী দেখতে পাওয়া যায়, মহাব্যোমস্থ এই সমস্ত সফটিক তার অপেক্ষা উৎকৃষ্টতর শ্রেণীর হওয়ায় তাদের অভ্যন্তর থেকে এক প্রকার স্বভাবজ জ্যোতি বার হয়ে থাকে । ও সংক্রান্ত বহা প্রমাণ ও বহ, জ্যামিতির রেখা ও অঙ্কন তার ঐ পথিখানিতে ছিল দেখা যায়, কিন্তু লোকনাথের প্রতিভা অত্যন্ত উচ্চশ্রেণীর হওয়ায় তিনি তাঁর মত সম্পবন্ধে আদৌ গোঁড়া ছিলেন না, সকলকে তাঁর মত পড়ে দেখে বিচার করতে অনরোধ করেছিলেন। তিনি মাঝামাঝি কিছু হওয়াটাকে অত্যন্ত ঘণা করতেন । তিনি চাইতেন উচ্চজ্ঞান, নয় তো একেবারে মােখাঁতা। ত্ৰিশঙ্কুর সবগবাসের উপর তাঁর একটা আন্তরিক অশ্রদ্ধা ছিল। একবার তিনি কয়েক বৎসর ধ’রে বহর পরিশ্রম ক’রে সাংখ্যের এক ভাষ্য প্রণয়ন করেছিলেন । লেখা শেষ ক'রে তাঁর মনে হলো তিনি যেমনটি আশা করেছিলেন ভাষ্য তেমনটি হয়নি, অনেক খৎ রয়ে গিয়েছে, অনেক চেন্টা করেও বিভতি শ্রেষ্ঠ গল্প-১৩