পাতা:বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের শ্রেষ্ঠ গল্প.pdf/২০১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নাস্তিক ్సa করতেন ! লোকনাথ তাঁর কাছে গিয়ে প্রশন জিজ্ঞাসা করলেন । মাধবাচায্য বোঝাতে গিয়ে প্রথমত মল্কি কি, মন্তি কয় প্রকার, মস্ক্রির ও নিববর্ষণের মধ্যে প্রভেদ কিছ আছে কি না, প্রভৃতি এত বিস্তৃতভাবে বলতে লাগলেন ও এত শাস্ত্ৰবাক্য উদ্ধত ক’রে তাঁর মতের পরিপোেযাণের চেণ্টা পেতে লাগলেন যে, লোকনাথ অত্যন্ত পাণ্ডিত্যপ্রিয় হলেও তাঁর মনে হতে লাগল, মক্সির একটি স্বরূপ তিনি বঝেছেন, সেটি সম্প্রতি মাধবাচায্যের বাক্যজালের হাত এড়ানো । স্নান করতে করতে একদিন তাঁর মনে হলো, ৩াঁর পিঠে যেন কিসের লেজ ঠেকছে । তিনি তাড়াতাড়ি পিছনে ফিরে জলের মধ্যে হাত দিয়ে দেখলেন, লেজ নয়, একটা জলজ গাছের পাতা গায়ে ঠেকছে । গাছটাকে তিনি টান দিয়ে উপরে তুলে ফেললেন, দেখলেন একটা শেওলা-গাছ,-“এ শেওলা নদীতে তিনি পাৰোব দেখেছেন, তেমন লক্ষ্য করেননি। ভাল ক’রে, চোখ পড়তে দেখলেন যে, শেওলার ডাঁটার যে অংশটা তাঁর গায়ে সড়সড় ক’রে ঠেকছিল, সেটা জলের নীচেৎকার অংশ, সে অংশের পাতাগলি ঝাউপাতার মতন।--কিন্তু জলের উপরের অংশের পাতাগলি পানের মতন। জলের উপবের অংশের পাতা জলের উপরে ভাসে, নীচের অংশের পাতা ও-রকম হলে স্রোতের তোড়ে ভেঙে যে ৩, কিন্তু চুলের গোছার মতন হওয়ায় তা বা জলকে বাধা দেয় না, জল তাদের মধ্য দিয়ে বেশ কেটে চলে যায়, যখন যে দিকে স্রোতের গতি পাতাগলি তখন সে দিকে হেলে পড়ে । লোকনাথ অত্যন্ত অন্যমনসিক ভাবে সনান ক’রে ফিরলেন । একটা কি জিনিস যেন তিনি ধরেছেন। তাঁর মনে হলো একই ডাঁটার উপরে নীচে দরকম পাতা হওয়ার মলে প্রকৃতির মধ্যে একটা চৈতন্যসত্তা বেশ যেন ধরা পড়ছে।--নইলে এই নগণ্য জলজ শেওলার পত্ৰবিন্যাসের মধ্যে এ নিপণতা কোথা থেকে এল ? পাছে ভেঙে যায়। এজন্যে কে এর জলের নীচের অংশের পাতা ঝাউপাতার মতন ক’রে গড়লে ? লোকনাথের আর একটা কথা মনে হলো । কয়েকদিন পথেৰে তিনি অত্যন্ত অধীরভাবে জাগতিক শক্তির কাছে তার চৈতন্যসত্তার অস্তিত্ব-সম্বন্ধে একটা প্রমাণ চেয়েছিলেন, তাঁর সেই প্রার্থনা কি এইভাবে কেউ পণ্য করলে ? ন্যায়, যক্তির দিক থেকে এ সিদ্ধানত এত বিপজ্জাজনক তাঁর মনে হল যে, তিনি এ-কথা জোর ক’রে মন থেকে দার ক’রে দিলেন । সাধারণ মানষের মতন এত শীঘ্র তিনি কোনো সিদ্ধান্তেই পোছতে পারেন না ! তব তিনি ভেতরে ভেতরে দিন দিন কেমন অন্যমনস্ক হয়ে উঠতে লাগলেন । সেই জলজ শেওলার শকানো ডাটা পাতা কুটীরের সামনে প্রায়ই পড়ে থাকতে দেখা যেত। পথিপত্র তিনি আজকাল কমই খোলেন । নদীর ধারে ধারে যেখানে বন্যগাছের শ্যামপত্রসম্ভার স্রোতের জলে ঝাপ সি হয়ে প'ড়ে থাকত, দীঘ দীঘ ঘাসের ফলে স্তুপে স্তুপে ফটে জলের ধার আলো ক'রে থাকত, পত্রনিবিড় ঝোপগলির তলায় জলচর পক্ষীরা ডিমগলি গোপনে শকিনো পাতা চাপা দিয়ে রাখ৩, লোকনাথ বেশির ভাগ সময় সেইসব স্থানে কি দেখে দেখে ফিরতে আরম্ভ করলেন। তাঁর কুটীরের সামনে মাঠে এক রকম ছোট ঘাসের কুচো কুচো সাদা