পাতা:বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের শ্রেষ্ঠ গল্প.pdf/৩২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SqW বিভতিভষণের শ্রেষ্ঠ গল্প সেইখানা পাইয়া টানিয়া লইল । তারপর জানালা দিয়া বাড়ীর মধ্যে চাহিয়া দেখিয়া চাদরখানা তাড়াতাড়ি ছেলেটির হাতে দিয়া চুপি চুপি বলিল—এইখানা নিয়ে যা, এতে শীত বেশ কাটবে। কাটবে না ? খাব মোটা । শীগগির যা, লকিয়ে নিয়ে যা, কেউ যেন না দেখে- ** ছেলেটি চাদর হাতে হতবন্ধি হইয়া ইতস্তম্ভত করিতেছে দেখিয়া সাশীলা বলিল-ওরে এক্ষনি কে এসে পড়বে, শীগগির যা • • • ছেলেটাকে বিদায় দিয়া সমশীলা ভিতর-বাড়িতে ঢকিয়া দেখিল অবশ্যর আহার করিতে বসিয়াছেন। ছেলেটার দঃখে সশীলার মন খাব খারাপ হইয়া গিয়াছিল, সে গিয়া রান্নাঘরে ঢকিয়া কাজে মন দিল, “বশারকে জিজ্ঞাসা করিল। --আপনাকে কিছ দেব বাবা ? মোক্ষদা ঝঙ্কার দিয়া উঠিলেন-তোমাকে আর দিতে হবে না, যে মিনিট দিয়েছ তাতেই প্রাণ ঠান্ডা হয়ে গিয়েছে, নাও এখন পার তো এদিকে এস একবার, হাড়িটা দেখ, নয় তো বলো, নিজে মারি-বাঁচি একরকম করে সাঙ্গ न जुळि । রামতন কোন কথা বলিলেন না, আপন মনে খাইয়া উঠিয়া চলিয়া গেলেন । এই সব ব্যাপারে সশীলা অত্যন্ত চটিয়া যাইত, রামতন, পত্রিবধর নিকট কোন জিনিস চাহিয়া খাইলে তাহার রাগ গলিয়া জল হইয়া যাইত, কিন্তু লোকে তাহাকে জব্দ করিতেছে বা অপমান করিবার ফন্দী খাঁজিতেছে ভাবিলে তাহার আর কান্ডিজ্ঞান থাকিত না, সেও কোমর বাঁধিয়া রণে আগয়ান হইত । সে-ই বা ছাড়িবে কেন ? মাস-দাই পরে । ফালগন মাসের মাঝামাঝি, কিন্তু বেশ গরম পড়িয়াছে । কিশোরী অনেক রাত্রে বাড়ী ফিরিয়াছে। বাড়ীতে যে যাহার ঘরে ঘামাইতেছে। সে নিজের ঘরে ঢকিয়া দেখিল সশীলা ঘরের মেঝোয় বসিয়া একখানা চিঠি লিখিতেছে। কিশোরী সশীলাকে জিজ্ঞাসা করিল-কাকে চিঠি লেখা হচ্ছে ? সশীল চিঠির কাগজখানা তাড়াতাড়ি অচিল দিয়া চাপিয়া সম্ববামীর দিকে ফিরিয়া একটা দলটামির হাসি হাসিল, বলিল—বলবো কেন ? -থাক, না বলো, ভাত দাও । রাত কম হয় নি। আবার সকাল থেকেই খাটনি আরম্পভ হবে । সশীলা ভাবিয়াছিল সবামী আসিয়া সে কি লিখিতেছে দেখিবার জন্য পীড়াপীড়ি আরম্ভ করবে। প্রকৃতপক্ষে সে চিঠি কাহাকেও লিখিতেছে না, স্বামীকে কথা বলাইবার এ তার একটা পরোনো কৌশল মাত্র । অনেক দিন সে স্বামীর মাখে দটো ভাল কথা শানে নাই, তাহার নারী-হৃদয় ইহারই জন্য তুষিত ছিল এবং ইহারই জন্য সে ঘামে ঢালিতে ঢলিতেও এই সামান্য ফাঁদটি পাতিয়া বসিয়া ছিল--কিন্তু কিশোরী ফাঁদে পা দেওয়া দরে থাকুক, সেদিকে ঘোষিলও না দেখিয়া সাশীলা বড় নিরৎসাহ হইয়া পড়িল ।