পাতা:বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের শ্রেষ্ঠ গল্প.pdf/৬৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দ্রবময়ীর কাশীবাস 6S জিনিস আছে দেখবার আগ্রহে । তাদের বাড়ীতে এমন কেউ নেই যে বিদেশে চাকরি করে-নিতান্তই অল্পবিত্ত গহন্থের সংসার-চাকুরে বাবরা বাড়ী আসবার সময় কি কি অপৰিবা জিনিস না জানি নিয়ে আসে। দ্রব ঠাকরণ জিজ্ঞেস করলেন-তারপর, কি মনে করে ? হঠাৎ ষে ? বাড়ীকে মনে পড়েচে তা হলে ? বাবাঃ, সারা আষাঢ় মাস অসহখে ভুগে ভুগে তাই এখনও কি সেরোচি ? এমন একটা লোক নেই যে, এক ঘটী জল এগিয়ে দ্যায়-ওই ন'বোঁ ছিল তাই-এত চিঠি দিলাম, না এল টেব, না এল বিন্দে, না এলে তুমি সন্ধ্যার পর নঠিাকরণ খবর পেয়ে ছটে এলেন। গ্রামের ছেলে, জন্মাতে দেখেচেন, অনেক দিন পরে দেখে খাব খাশি। কুশলপ্রশনাদি জিজ্ঞাসা করার পর বল্লেন-হ্যাঁ কান, তা তোমরা সোনার চাঁদ সব নাতি থাকতে বাড়ী এখানে বেঘোরে মারা যাবেন ? কালাজারে ধরেছে-এই আজ ভাল আছে, কাল এমন সময় সব লেপ কাঁথা মাড়ি দিয়ে পড়বে ! কে দ্যাখে, কে শোনে--তার ওপর আবার গোর—একটা বিহিত করে যাও যা হয়-নইলে কান বল্লে-সে সব জন্যেই তো আসা। চিঠি পেয়েচি অনেক দিন, সায়েব ছটি দিতে চায় না-পবের চাকরি।--তাই দেরি হলো । দ্রব ঠাকরণ বল্লেন-ভালো কথা ন'বেী, দাখানা গজা নিয়ে যাও, জল খেয়ো- কান, এনেচে আমার জন্যে-তা ও যেমন পাগল, আমার কি দাঁত আছে যে গজা খাবো।--নিয়ে যাও ন’বেী ! —তা দ্যাও দাখানা নিয়ে যাই । ভালোটা মন্দটা এ পাড়াগাঁয়ে তো চক্ষেই দেখতে পাইনে দিদি-বোঁচে থাক তোমার সোনার চাঁদ নাতিরা, তোমার ভাবনাটা কিসের ? বিশেষ করে কােনর মত ছেলে নেই এ গাঁয়ে—আমি ষা বলবো তা মাখের ওপরই বলবো বাপ ফলে ন’বেী দখোনার জায়গায় চারখানা গজা হাতে খাঁশি মনে বাড়ীর দিকে চল্লেন আর কিছুক্ষণ পরে । নাতি-ঠাকুরমার পরামর্শ হলো রাত্রে । কান এক মতলব ফেদে এসেচে । ঠাকুরমাকে সে কাশী নিয়ে গিয়ে রেখে আসবে। তার একজন কে বন্ধর মা কাশীতে থাকেন, সেই একই বাড়ীতে ঠাকুরমাকে রাখবে। পরদিন সকালে ন'বোঁ শনে খাব খাঁশি, অমন সব নাতি থাকতে ভাবনা কি ? তীর্থ ধৰ্ম্মম করার সময় তো এই । তাঁর যদি আজ ছেলেটাও বেচে থাকতো । আজ প্রায় পািয়তাল্লিশ বৎসর পন্ধেব সাত মাস মাত্র বয়েসে নািঠাকরণের সে ছেলে মারা গিয়েচে । সে-ই প্রথম, সে-ই শেষ । তাঁর আর ছেলেপলে হয় নি । যাবার দিন দুব ঠাকরণ প্রিয় মাংলি গরটার ভার দিয়ে গেলেন ন'বেীকে । বার বার মাথার দিব্যি দিলেন, মাংলিকে যেন যত্ন করা হয় । বল্লেন-ও গোর তোমারই হয়ে গেল ন’বেী, আমায় আশীৰবাদ করো যেন কাশীতে হাড় ক’খানা রাখতে পারি।--নাতিদের ঘাড়ের বোঝা যেন নেমে যায়—আমার বড় নাতির ভাবনা কি, তার সচ্ছল, অবস্থা, লাচি পরোটা জলখাবার, তেলে ঘিয়ে কলকলে