পাতা:বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের শ্রেষ্ঠ গল্প.pdf/৮৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিভতিভষণের শ্রেষ্ঠ গল্প গোপীকৃষ্ণবাব মাঝে মাঝে আপিস ফেরত সেখানে বসে চা খান, চায়ের পয়সা বাঁচে । আজও গেলেন। শম্ভু ডাক্তারের ডাক্তারখানায় রোগীর ভিড় নেই এই একটা সবিধে। শম্ভু বসে বসে খবরের কাগজ পড়ছে, গোপীবাবকে দেখে কাগজ রেখে বললে—এসো, এসো একটা খবর দেখেছ-জাপানীরা उषादान छ क्षेळ••• --আরে ভাই, ওসব রেখে দাও । নিজেরা মরছি নানান তালে, আবার পরের খবর রাখতে গেলে বাঁচি কেমন করে ? চা খাওয়া ফিনিশা ? -भा, बाना, 5ा आनाई । -কেন, সেন্টাভ কি হলো ? -পিন পাচ্ছি নে, সেটাভাটার কি যে হয়েছে কাল থেকে-চা আনাই। ও মধ্য- । ডিসপেনসারীর চাকর মধ্য পাশের দোকান থেকে দাপেয়ালা চা নিয়ে এল। ঘরের কোটালি নিয়ে। দ-পেয়ালা ভতি করে কোটালিতে একটি বাড়তি চা রইল, সেটাকু আবার ঢেলে দিলে । চা খেতে খেতে শশীভু ডাস্তার ও গোপীকৃষ্ণবাব বিদেশ-ভ্রমণের গলপ করেন-অথৎি ভ্রমণ করবার ইচ্ছা প্রকাশ করেন, করা উচিত বা করলে ভাল হয়। সেকথা বলেন । এটা এরা দরজনে প্রায়ই করে থাকেন, দই বন্ধ রই খব বেড়ানোর সখ কিন্তু সংসার নিয়ে জড়িয়ে পড়েছেন, টাকা পয়সায় কুলোয় না, কোথাও কখনও যাওয়া ঘটে না, বলেই সখি। শম্ভু ডাক্তার পশ্চিমে গিয়েছে মগরা পয্যন্ত, তাও অনেক কাল আগে, সেখানে ছিল মাসীর বাড়ী । গোপীকৃষ্ণ তার চেয়ে একটা বেশী, বন্ধমান পয্যন্ত ! দই বন্ধর পশ্চিম ভ্রমণের এই পৰ্য্যন্ত ইতি । তবে প্রতি বৎসর পজোর আগে দজনে বসে বিদেশ-ভ্রমণের প্ল্যান অ্যাটেন নানারকম-এবার কোথাও যাওয়া যাক-বােঝলে ? কত পয়সা তো কতদিকে খরচ হচ্ছে। টাকা চল্লিশ হলে একবার কাশীটা ঘরে আসা হয় । তখন তক বাধে দজনে । কাশী না গয়া কিংবা সাঁওতাল পরগণা। অবশেষে সেদিন ব্যাপার মালতুবী থাকে। পরদিন আবার শহর হয় আলোচনা-কি বল, তা হলে ভাগলপরেই ঠিক করা যাক। পাহাড় কখনও দেখা হয়নি। ভাগলপরে কি পাহাড় আছে ? ঠিক সংবাদ দািজনের কেউ জানেন না। এমনিভাবে প্যাজো এসে পড়ে, এই একমাসে বহা নাম উচ্চারিত হয়। ভ্রমণ-সম্পকো-পেশোয়ার, কাশমীর থেকে শার করে দিল্লী, জয়পাের, বান্দাবন, শিলং, এমন কী বীরভম জেলার নলহাটি পয্যন্ত । শেষ পয্যন্ত কোনও বার কোথাও যাওয়া ঘটে না, শম্ভু ডাক্তারের তিন মাসের দোকান ভাড়া বাকি পড়তে বাড়িওয়ালা নালিশের ভয় দেখায়, গোপীকৃষ্ণবাবার ছোট ছেলে টাইফয়েডে পড়ে—যায় সব ভেস্তে । বহল বৎসর ধরেই এমন চলেছে। তবও এরা ছাড়বার বা দমবায় পাত্রে নন। শ্রাবণ মাসের শেষ থেকে শার করে পড়জোর সময় পৰ্যন্ত ভ্রমণের সম্পবন্ধে আলোচনা এদের কামাই নেই। এতে তো পয়সা খরচ হয় না, অথচ টাইমটেবিল ঘেটে পাঁচটা দরের নাম পড়ে বেশ আনন্দ পাওয়া যায়। আজও গোপীকৃষ্ণবাব চা খেতে খেতে বললেন-আর মাসখানেক বাকি