পাতা:বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের শ্রেষ্ঠ গল্প.pdf/৯০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

げや বিভতিভাষণের শ্রেষ্ঠ গল্প লাভ ? তাঁর দটি ছেলে, বেচে থাকলে ও-সম্পত্তি তাদেরই থাকবে। বাড়ী পিসিমা চোখ বাজবেন আজ বাদে কাল, বাড়ীঘর বজায় রাখবার গরজ তাঁর তত থাকবার কথাও নয় । শম্ভু ডাক্তারের বৈঠকখানায় গোপীকৃষ্ণবাবা ঢাকলেন একটা মন-মরা ভাবে । দেখলেন শম্ভু ডাস্তারের মনের অবস্থাও তেমন সবিধে নয়। চা এল, ভ্ৰমণ বিষয়ে কোনও কথাই ওঠে না, অন্যান্য কথাই চলে । গোপীবাব সাহসে ভর করে বল্লেন-তারপর যাওয়া সম্প্রবন্ধে কি ঠিক করলে ? শম্ভু ডাক্তার বল্লেনভাই, এ মাসে যা কিছ. পেয়েছিলাম, সব গেল ছেলেমেয়েদের কাপড়-চোপড় কিনতে । আগে তো ভাবিনি। অত টাকা কাপড়ে খরচ হবে, একখানা করে কাপড় কিনতে তেতাল্লিশ টাকা খরচ হয়ে গেল। আর হাতে টাকা নেই। তবে পাঁচদিন এখনও বাকি, দেখি যদি এর মধ্যে কোনও শান্ত কেস-ট্রেস এসে যায়। ভগবানের 花T颈一 গোপীকৃষ্ণবাবও নিজের টানাটানির কথা ব্যক্ত করেন । তবে এখনও পাঁচদিন বাকি ঐ যা ভরসা। যদিও এটা মনকে চোখ ঠাৱা মাত্র, পাঁচ দিনে গোপীকৃষ্ণবাব কি আর ত্ৰিশ হাজার টাকা লটারিতে পাবেন, তা কিছু নয় । শম্ভু ডাক্তার বল্লেন-আচ্ছা, চিত্রকট যদি না-ও হয়-অতন্দর-টাইমটেবিলে একটা জায়গা বলছে ঋষ্যশােঙ্গ মানির আশ্রম, লাপ লাইনের কাজরা স্টেশন থেকে ছ’ মাইল । সিনারি বেশ বলে লিখছে —আজ আমার শালীও বলছিল, গ্র্যান্ডকড লাইনের নিমিয়াঘাট বলে একটা সেন্টশন থেকে পরেশনাথ পাহাড় যাওয়া যায়। তাই যাবে ? খরচ কম হয়। আবার রাত দশটা পয্যন্ত আলোচনা। ঋষ্যশােঙ্গ মানির আশ্রম, না পরেশনাথ পাহাড় ? কোনটা সস্তা ? হিসেব করে টাইমটেবিল পড়ে দেখা গোল তাতেও পাঁচশ থেকে ত্ৰিশ টাকা খরচ পড়বে জন পিছ । তার কমে হবে না ! -ও একরকম করে যোগাড় হয়ে যাবে এখন, বললেন শশীভুবাব । আশচয্যের বিষয়, রোগী এবং রোগ দই হঠাৎ কলকাতা শহরে বড় কমে গেল। সারাদিনে আগে তবও দটো টাকাও হতো এখন পাঁচ আনার নক্সভমিকাও বিক্রি হয় না। রোগী দেখা দরের কথা, ওষধ বিক্রি পয্যন্ত বন্ধ । তার ওপর শম্ভু ডাক্তারের মামাতো ভাই বিধ এসে হাজির, সঙ্গে তার সন্ত্রী। দেশে চলছে না আন্দেী, এতবড় ডাক্তার পিসতুতো ভাই থাকতে তারা কি না। খেয়ে মরবো ? গোপীকৃষ্ণবাবরে অবস্থাও যে ভাল তা নয়। ইতিমধ্যে একদিন তাঁর ভাইঝিজামাই দই ইলিশ মাছ পাঁচ টাকা দিয়ে কিনে নিয়ে হাজির ৷ গোপীবাবার সত্ৰী এসে বললেন--ওগো শািনছো, জামাইয়ের ও-মাছের টাকা দিয়ে দিও যাবার গোপীবাব রেগে উঠে বললেন-কেন ? আমি কি বলেছিলাম আমার বাসায় মাছ কিনে না। আনলে আমরা সবাই না খেয়ে মরতে বসেছি ? পাঁচ টাকা খরচ করে একজোড়া মাছ না। আনলে চলছিল না ?