পাতা:বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের শ্রেষ্ঠ গল্প.pdf/৯৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নসমোমা ও আমি খাবার চুরি বন্ধ হলো না। রোজ রাত্রে একগাদা বাসি লাচি। আর রসগোলার রস আনেন। নিজে খান, আমাকেও যথোিট দেন । ওঁর পেটের অসংখ ছাড়ে না। আমার বারণ শোনেন না মোটে । বলেন-খেয়ে যা উঠিয়ে নিতে পারি ! কাকা একপয়সা উপােড়-হাত করবে: बन्म } আমি বললাম-আমি বাপের বাড়ী যাবো আষাঢ় মাসে, আমায় मृन् কাপড় কিনে দেবে না ? উনি ঠোঁট উলেট বলেন-কে দেবে ? কাকা ? তা দেখে আর বাঁচলাম না। «*x —সত্যি আমার নতুন কাপড় হবে না ? বাপের বাড়ীতে কিন্তু সবাই নন্দে করবে । —যদি আমি দিতে পারতাম, সব হোত । আমার কি ইচ্ছে করে না তোমায় কাপড় দিতে ? কোথায় পাবো ? --তাই তো ! অনেকের নিন্দে শািনতে হবে তাই ভাবচি । আষাঢ় মাসে বাপের বাড়ী এলাম । স্বামীও আমার সঙ্গে এলেন । তাঁকে দেখে গ্রামের সমবয়সী মেয়েরা নানা রকম নিন্দাবাদ করতে লাগলো । আমায় একদিন রায়বাড়ীর মেজগিন্নী বলেন-হ্যাঁ পাঁচী, জামাই নাকি তাড়, ঘোঁটে ময়রার দোকানে ? আমি অতশত বঝি নে, বল্লাম-হ্যাঁ । খব ভালো খাজা তৈরি করে। সবাই হাতের সংখ্যাতি করে মােসীমা । মেজগিষী হেসেই খন । তাঁর বড় পত্রিবধ, যে বাপের বাড়ী থেকে আসতে চায় না, বাপের বাড়ীর গ্রামে কোন প্রতিবেশী ছেলের সঙ্গে প্রণয়াসক্ত, এসব কথা তিনি তখন ভুলে গেলেন। আমার স্বামীর খাবারের দোকানে কাজটাই প্রবল দোষের ও নিন্দের কারণ হয়ে উঠল তাঁর কাছে । আমার স্বামীকে গ্রামের লোকে নতুন জামাই বলে খাতির আদর করলে না । আমার তাতে মনে বড় দঃখ হলো। নতুন জামাইকে সকলে নেমন্তন করে খাওয়ায়, আমার স্বামীকে সবাই যেন কেমন হেনস্থা করলে । নসমোমা ঠিক তেমনি ভাত রাঁধচে । আমি তার ওখানে গিয়ে বসে গলাপ করে একট, যা আনন্দ পেতাম। একটা জিনিস দেখলাম, নাস ধৰ্ম্মেমকম্মে মন দিয়েচে এই বয়সেই।। চন্দন ঘষচে দেখে বল্লাম--দিদিমা পজো করেন বঝি আজকাল । নস হেসে বলেল-মা নয়। পিজো করবো। আমি । রোজ শিব গড়িয়ে পাঁজো করি । মানষ হয়ে জন্মে শােধ খেয়ে যাব শওরের মত ! আমার হাসি পেলো। ওর মাখে তত্ত্বকথা শানে। নসমোমা আমাকে শসা, কেটে খেতে দিল, নিজেই নারিকেলের নাড় করেচে। ঘরে, তা দিলে, চা খেতে लाल । বছর দই-তিন কাটলো। আমার স্বামীর শরীর সারালো না। ক্ৰমেই যেন আরও খারাপ হয়ে উঠচে । শাশাড়ী ও খড়শাশড়ী বলেন-ওই অলক্ষিণে বেী এসে বাছার শরীর একদিনও ভালো গেল না ।