পাতা:বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের শ্রেষ্ঠ গল্প.pdf/৯৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S8 বভতিভষণের শ্রেদ্ঠ গল্প শাশড়ী বল্লেন-সংসারের কোনো জিনিসে অাঁট নেই তা দেখেছি লক্ষ্য করে ? কথাটা নেহাৎ মিথ্যে নয়, আমিও স্বীকার করাচি। সত্যিই যেন আমার কোনো জিনিসে কোনো আসান্তি নেই । ভালো কাপড় নয়, গহনা নয়--কোনো কিছতে না। আমার স্বামী বলেন -পয়সা জমাও না কেন ? যা মাঝে মাঝে হাতে এনে দিই, জমিও । তোমার আখেরে ভালো হবে । ওসব কথা আমি শনেও শািনন কোনো দিন । কার আখেব কি হবে সে ভেবে ফল কি ৷ আমার একটি ছেলে হলো, কয়েক মাস পরে মারাও গেল । সবামীর অসখি সাবে না । সাংসারে খেটেই মরি, মাখের মিলিট কথা কেউ বলে না । স্বামী আমায় নানারকম সাংসারিক উপদেশ দেন । তার যে রকম শরীর, কবে মবে যাবেন, তখন কি উপায় হবে ? আমি যেন কিছ, কিছ: হাতে রাখি । এ কথা আমি যখন শনি তখনই মনে থাকে, তারপর আর মনে থাকে না । সেই মাঘ মাসে আমি বাপের বাড়ী এলাম। গ্রামে এসে শনি নসমোমার মাথা খারাপ হয়ে গিয়েচে, সে দিন-রাত পাজো-আচ্চা নিয়ে থাকে, কারো সঙ্গে কথা বলে না, কি রকম যেন । আমি গিয়ে দেখা করলাম বিকেলের দিকে । নসমোমা বল্লে-কি খবর পাঁচী, কখন এলি ? --কাল এসেছি । ভালো আছে ? --ভাল আছি। খাব আনন্দে আছি । - সবাই তোমাকে পাগল বলচে যে । নসমোমা মদ, হেসে চুপ করে রইল। তারপর আমার দিকে শান্ত দটিতে চেয়ে বল্লে-আমি আসল বস্তু পাওয়ার চেন্টায় আছি । এতে যে যা বলে বলকে । আমি পাগল হই। আর ছাগলই হই-হি-হি-হি-হি হ্যাঁরে পাঁচী ? শেষের কথাগালো আমার কানো একটি অসংলগ্ন-মতি ঠেকলেও নসমোমার ওপর আমার শ্রদ্ধা বেড়ে গেল । কি যেন একটা ওর মধ্যে আমি পেলাম, যা সাধারণ মানষের মধ্যে দেখিনি ! ওর মাখের চেহারা যেন অন্য রকম হয়ে গিয়েছে ! লোকে টাকাকড়ি ঘর-জমি আকড়ে পড়ে আছে দেখচি আমার চারিপাশে, খড়শাশড়ীকে দেখেচি গাছের সামান্য একটা আমি যদি গাছের তলা থেকে কোনো বাড়ীর ছেলে কুড়িয়ে নিয়ে যায়। তবে ঝগড়া করে পাড়া মাত করেন । গাঁয়ের মধ্যে দেখোঁচ এক হাত জমি হয়তো এগিয়ে বেড়া দিয়েছে। কেউ, তাই নিয়ে মামলা-মোকদ্দমা দা-তিন বছর ধরে চলেচে । এমন আবহাওয়ার মধ্যে নসমোমা মানষে হয়েও সর্বতন্ত্র, ওর কাপড়-চোপড়ে, খাওয়ার, বিষয়-আশয়ে কোনো আসক্তি নেই, পৈতৃক বিষয় আছে, কিন্তু ভায়েদের দিয়ে বসে আছে সন্মবঙ্গব, একটা পয়সাও চায় না । আমার স্বামী এসে দ-চারদিন রইলেন। স্বামীর ওপর আমার কেমন একটা মায়া হয় । এর মাখের দিকে কেউ যেন চায় না। আমার শাশড়ী ছাড়াতাও তিনি বড়ো হয়েছেন, দেওরের কাছে কোনো কথা তাঁর খাটে না ।