পাতা:বিভূতি বীথিকা - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১০২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তার ধারণা ছিল কাল রাত্রের আধখানা নারকোল বোধ হয়। ঘরের কোথাও আছে, কিন্তু খিদের জালায় ছেলেরা বোধ হয়। কখন শেষ করে দিয়েচে সে দেখেনি । কাপালী-বীে ওর দিকে চেয়ে রইল অদ্ভুত দৃষ্টিতে। ওকে দেখে কষ্ট হয়। একটু কাছে ঘেষে এসে বললে-আজ যাবো । অনঙ্গ-বেী বিস্ময়-সুরে বললে— কোথায় যাবি ? -ইটখোলায় । -কোন ইটখোলায় ? -দীঘির পারের বড় ইটখোলায়- জানো না ? আহ ! কাপালী-বেী যেন ব্যঙ্গের সুরে কথা শেষ করলে। অনঙ্গ-বেী বললেসেখানে কেন যাবি রে ? কাপালী-বেী চুপ করে রইল নিচু চোখে । অনঙ্গ-বেী বললে-চুটুকি ! -বলে গে তুমি, বামুন-দিদি। তোমার মুখের দিকে চেয়ে আমি এতদিন জবাব দিই নি। আর পারি। নে না খেয়ে-না খেয়েই যদি মালাম, তবে কিসের কি ? আমি কোনো কথা শুনবো না-চলি বামুনদি, পাপ হয়ে নরকে পচে

< ८९3 ऊळ -

অনঙ্গ কোনো কথা বলবার আগে কােপালী-বীে ততক্ষণ হন হন করে চলেচে বেড়ার বাইরের পথে । অনঙ্গ-বেী পিছনে ডাক দিলে-ও বৌ শুনে যা, যাস নি,-শোন ও বৌ পুরোনো ইটখোলার এদিকে একটা বড় শিমূল গাছের তলায় অন্ধকারে কে একজন দাড়িয়ে । কােপালী-বেী আনাড়ির মত অন্ধকারে হেঁচট খেয়ে পথ চলে সেখানে পৌছুলো । দাড়িয়ে আছে পোড়া-যদু-বাল্যে সর্বাঙ্গ পুড়ে গিয়েছিল, এখনও সে দাগ মেলায় নি-তাই ওর ওই নাম গ্রামের মধ্যে। পোড়া যদুও বলে আবার যদু-পোড়াও বলে। যাদু ইটখোলায় কাঠ যোগান দেওয়ার ঠিকাদার । মোটা পয়সা রোজগার করে । যদু-পোড়া ওকে দেখতে পেয়ে বললে -এই যে ইন্দিকি ! কাপালী-বেী ভেংচি কেটে বললে-ইদিকি ! দেখতি পেইচি। এ অন্ধকারে আর ও ভূতের রূপ চোখ মেলে মেলে দেখতি চাইনে। আঁতকে ওঠবো ।