পাতা:বিভূতি বীথিকা - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১০৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হাতছাড়া করলি বাষ্ঠীসুদ্ধ না খেয়ে মরবে। টাকা নিয়ে কি ধুয়ে খাবো ? ও জিনিস পয়সা দিলে মেলবে না । গঙ্গাচরণ উঠবার উদ্যোগ করছে দেখে নিবারণ হাত জোড় করে বললেএকটা কথা বলি বাবাঠাকুর। ব্ৰাহ্মণ মানুষ, এত দূর এয়েচেন চালির চেষ্টায়। আমি চাল দিচ্চি, আপনি আমার বাড়ীতে দু’টো রান্না করে খান। রামুই চড়িয়ে দিন গোয়ালঘরে। মাছ পুকুর থেকে ধরিয়ে দিচ্চি, মাছের ঝোল ভাত আর গরুর দুধ আছে। ঘরে। এক পয়সা দিতি হবে না। আপনার । গঙ্গাচরণ বললে-না, তা কি করে হয় ? বাড়ীতে কেউ খায় নি। আজ দু’দিন। ছেলেপিলে রয়েছে, তা হয় না। তুমি আমাকে রান্নার জন্যে তো চাল দিতেই, আর দু’টো বেশী করে দাও । আমি দাম দিয়ে নেবো । ষাট টাকা করেই মণ দেবো, কিছু বেশী না হয় নাও । নিবারণ কিছুতেই রাজী হলো না । তার ওপর রাগ করা যায় না, প্ৰতি কথাতেই সে হাত জোড় করে, এখানে বসে খাওয়ার নিমন্ত্রণ তো করে সুৈখেচেই । গঙ্গাচরণ চলে আসচে, নিবারণ এসে পথের ওপরে আবার তাকে হাত জোড় করে রান্না করে খাওয়ার অনুরোধ জানালে । গঙ্গাচরণ রাগ করে বললে-আমি কি তোমার বাড়ী খেতে এসেচি ? যাও &-\&& ८व् - কিন্তু গঙ্গাচরণের মনের মধ্যে আর সে জোর নেই। হঠাৎ তার মনের চক্ষে ভেসে উঠেচে, দিব্যি হিঙের টোপা টোপা বড়ি ভাসচে। মাঝের ঝোলে, আলু বেগুন বড় বড় চিংড়ি মাছ আধ-ভাসা অবস্থায় দেখা যাচ্চে বাটির উপরে। ভাতে সেই মাছের বোল মাখা হয়েচে । কঁচা কাল একটা বেশ করে মেখে, • • নিবারণ বললে-আসুন, চলুন। আমার একথা আপনাকে রাখতেই হবে। সে শোনবো না। আমি। দুপুর বেলায় না খেয়ে বাড়ী থেকে ফিরে যাবেন ? হাবু ভাত খায় নি। আজ দু'দিন। অনঙ্গ-বৌ খায় নি। দু'দিনেরও বেশী। ও যে কি খায় না-খায় গঙ্গাচরণ তার খবর রাখে না । নিজে না খেয়েও সবাইকে জুগিয়ে বেড়ায়। তার খাওয়া কি এখানে উচিত হবে ? গঙ্গাচরণ নিবারণকে বললে, আচ্ছা যদি খাই, তবে এক কাঠা চাল দেবে ? --না। বাবাঠাকুর । মিথ্যে বলে কি হবে । চাল হাতছাড়া করবো না । আপনি একা এখানে বসে আধা কাঠা চাল রোধে খান তা দেবো । --তোমার জেদ দেখচি কম নয়। O R