পাতা:বিভূতি বীথিকা - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সাড়ে সাত ক্রোশ পথ । সকালে রওনা হয়ে বেলা এগারোটার সময় সেখানে পৌছলো। এখানে দোকানে অনেক রকম জিনিস পাওয়া যাচ্চে । গঙ্গাচরণের হাতে পয়সা নেই, জলখাবারের জন্য মাত্র দু’আনা রেখেছিল, কিন্তু খাবে কি, চিড়ে পাঁচসিকে সের মুড়ি ও তাই। মুড়কি চোখে দেখবার যো নেই। দু'আনার মুড়ি একটা ছোট্ট বাটিতে ধরে । ক্ষেত্র কােপালী বললে-ও দাদাঠাকুর, এ যে ভয়ানক কাণ্ড দেখচি। খাবা কি ? গঙ্গাচরণ ও ক্ষেত্র কাপোলী সাপ্লাই অফিসারের আপিসে এসে দেখলে সেখানে রথযাত্রার ভিড় । আপিসঘরের জানালা দিয়ে পারমিট বিলি করা হচ্চে, লোকে জানালার কাছে ভিড় করে দাড়িয়ে পারমিট নিচে । সে ভিড়ের মধ্যে ছত্রিশ জাতির মহা সম্মেলন। দস্তুরমত বলবান ব্যক্তি ছাড়া সে বৃহ ভেদ করে ভেতরে প্রবেশ অসম্ভব। ঘরের মধ্যে থেকে মাঝে মাঝে তাড়া শোনা যাচ্চে, লোকজন কিছু কিছু পিছিয়ে আসচে, কিছুক্ষণ পরেই আবার পূর্বের অবস্থা, ভিড়ের স্থিতিস্থাপকত্ব দিব্যি বেশী । গঙ্গাচরণ। হতাশভাবে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করলে। ভিড় কমবার নাম নেই, --বরং ক্রমবর্ধমান। গরমও তেমনি, আকাশে মেঘ জমে গুমন্টের সৃষ্টি করেচে। এক ঘণ্টা কেটে গেলে-হঠাৎ ঝুপ করে জানালা বন্ধ হয়ে গেল। শোনা গোল হাকিম আহার করতে গেলেন, আবার কখন আসবেন তার কিছু ঠিক নেই। ভিড় ক্ৰমে পাতলা হয়ে গেল-লোকজন কতক গিয়ে আপিসের সামনে নিমগাছের তলায় বসে বিড়ি টানতে লাগলো । ক্ষেত্র কােপালী বললে- ঠাকুরমশাই, কি করবেন ? –Af§ 4 —চলুন, বাজারে গিয়ে খোজ করি। যদি দোকানে পাই। এ ভিড়ে ঢুকতি পারবেন না । বাজারে গিয়ে প্ৰতি দোকানে খোজ করা হলো । জিনিস নেই কোনো দোকানে। পাতিরাম কুণ্ডুর বড় দোকানে গোপনে বললো-সুজি দিতে পারি, দেড় টাকা সের। লুকিয়ে নিয়ে যাবেন সন্দের পর। ক্ষেত্র কাপোলী বললে-আটা আছে ? --আছে, বারো আনা করে সেৱ । Y) OG