পাতা:বিভূতি বীথিকা - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গঙ্গাচরণের ভরসা ছিল তার চেহারার দিকে চাইলে সাপ্লাই অফিসার ভদ্রলোক বা ব্ৰাহ্মণ বলে খাতির করবে। কিন্তু তাকে নিরাশ হতে হলো, কারণ হাকিম চোখ তুলে তার দিকে চাইলেনই না। তার চোখ টেবিলের ওপরকার কাগজের দিকে । হাতে কলের কলম অর্থাৎ যে কলম কালিতে ডোবানের দরকার হয় না । গঙ্গাচরণের গলা কেঁপে গেল, বুকের মধ্যে চিপ চিপ করতে লাগলো। হাত-পা কঁাপিতে লাগলো । সে বললে-হুজুর, আমার স্ত্রী আঁতুড়ের । কিছু খাবার নেই, আঁতুড়ের পোয়াতি, কি খায়, না আছে একটু আটা হাকিম ধমকের সুরে বললেন-আঃ, কি চাই ? -আটা, চিনি, সুজি, একটু মিছরি -ওসব হবে না । -না দিলে মরে যাবো হুজুর। একটু দয়া করে -হবে না । আধাসের আট হবে, এক পোয়া সুজি, একপোয়া মিছরিবলেই খসখস করে কাগজ লিখে হাকিম গঙ্গাচরণের হাতে তুলে দিয়ে বললেন Հi 8 --হুজুর, পাঁচ-ছাঁকোশ দূর থেকে আসচি। এতে ক’দিন হবে হুজুর, দয়া করে কিছু বেশী করে দিন -আমি কি করবো ? হবে না । যাও গঙ্গাচরণ হাত জোড় বললে-গরীব ব্ৰাহ্মণ, দয়া করে আমায় হাকিম বিরক্তির সঙ্গে হাত বাড়িয়ে বললেন-দেখি কাগজ ? যাও, এক সের আটা-যত বিরক্ত । লোকজনের ধাক্কায় গঙ্গাচরণকে ছিটকে পড়তে হলো জানিলা থেকে । পেছন থেকে দু-একজন বলে উঠলো-ওমা দেরি করে কেন ? কেমন ধারা লোক তুমি ? সরো চাপরাশি চেচিয়ে বললে-হঠ যাও বাজারে দোকান থেকে আট কিনতে গিয়ে দেখলে আটা এবং সুজি দুই খারাপ। একেবারে খাদ্যের অনুপযুক্ত নয় বটে। তবে জিনিস ভালও নয়। একটা ময়রার দোকানে ওরা খাবার খেতে গেল। ক্ষেত্র কােপালীর বড়ইচ্ছে সে গরম সিঙাড়া খায়। শহর বাজারে তো প্ৰায় আসা হয় না-থাকে è òd