পাতা:বিভূতি বীথিকা - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৫৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সুলোচনা সন্ধ্যা হইয়াছে, সুকিয়া স্ট্রট দিয়া যাইতেছি। ডাক্তারখানা খুলিতে দেৱী হইয়া গিয়াছে, সময় হইয়া আসিল, সুতরাং হন হন করিয়াই চলিয়াছি-২। এমন সময়ে বাড়ীঘরের থামের ছায়ার আলো-আঁধারির মধ্যে একটি স্ত্রীলোককে দেখিয়াই আমি থমকিয়া দাড়াইয়া গেলাম। এ যেন সেই সুলোচনাব মা না ? অবিকল সেই রকম দেখিতে, যদিও বহুকাল দেখি নাই। কিন্তু তাও কি সম্ভব ? এতকাল পরে সুলোচনার মা বঁচিয়া থাকিবে এবং কলিকাতা শহরেই থাকিবে ? একটু জোর গলায় ডাক দিলাম-শুনছেন ? শুনছেন ? বলি শুনছেনএই যে ? যে বৃদ্ধটি ফিবিয়া দাডাইল আমার ডাক শুনিয়া এবং হয়তো বা তাহাকেই কেহ ডাকিতেছে মনে কবিয়া-বিস্ময়ের সহিত দেখিলাম সে সুলোচনার মা-ই বটে। সুলোচনার মা কাছে আসিল । প্রথমে চিনিতে পারিল না, পরে পরিচয় দিতেই দন্তহীন মুখে এক গাল হাসিয়া বলিল-তুমি যদু ! আহা, কতকান্ধু, দেখি নি তোমাদের -ইত্যাদি বা ঐ ধরনের কোন উক্তি । আমার চক্ষুর সম্মুখ হইতে ছাব্বিশ-সাতাশ বছরের যবনিকা হঠাৎ সরিয়া গেল। গত মহাযুদ্ধেবও কয়েক বৎসর পূর্বের কলিকাতা-ঘোড়ডু, ট্রাম সবে মাত্র বন্ধ হইয়াছে “তখনকার আমলের অতি সুন্দরী আধুনিকাদের মধ্যে যে আমার চোখে সর্বপ্রধান সুন্দরী এবং সবচেয়ে আধুনিক ছিল, কিছুকাল পাবে যাহাকে জীবনের জনসমুদ্রে একদম হারাইয়া cक,ि এ সেই মেযেটির মা । তখনকার মেয়েদের চুল বাধিবার রীতি বা কাপড়-চােপড় পরিবার ধবন একালের মত ছিল না বটে, কিন্তু সত্যিকার সুন্দরী যে হয়, তাহাকে যে-কোন সাজে, যে-কোন ঢঙে, যে-কোন ভঙ্গিতে মানায়, এবং সুলোচনা ছিল সেই ধরনের স্বন্দৱী মেয়ে। তাহার সেই দীর্ঘ ঋজু চম্পক গৌর যৌবনদীপ্ত দেহ, লম্বা টানা ধ্রুপলো কালো ডাগর চোখ, কালো কেঁকড়া চুলের রাশি, নিটোল স্বাগঠিত বুহি দুটি, সুন্দর মুখশ্ৰী কলিকাতার পথে পথে গলির আড়ান্ধে আবডালে, পর্ষে বাকি হঠাৎ ফিরিয়াই, কিংবা কোন নির্জন পার্কে পদচারণরত অবস্থায় 38 à f ብኹ-ኣ›