পাতা:বিভূতি বীথিকা - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৫৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আমি এ উত্তরের জন্য আদৌ প্ৰস্তুত ছিলাম না। অপ্ৰতিভের মত বলিলাম-ও ! • • • দু-জনেই কিছুক্ষণ চুপচাপ। পরে আমিই বলিলাম-আজকাল আছেন। কোথায় ? - রাস্তায়-গবর্নমেণ্টের রাস্তায় । সবই বুঝিলাম। বড় কষ্ট হইল এ কথা বলিলে ঠিক কথা বলা হইবে না। কষ্ট হইলেও বুড়ির জন্য হয় নাই। বুড়িকে কিছু পয়সা দিয়া বিদায় করিয়া দিব ভাবিতেছি, এমন সময়ে সে বলিল-তোমার সঙ্গে দেখা হল বড় ভাল হল বাবা। আমার ঘাড়ে সব ফেলে দিয়ে হতভাগী তো পালাল, এখন তার দুটি ছেলে, একটির বয়েস ষোল আর একটি চোদ্দ, এদের নিয়ে আমার কি দুর্দশ ভাব দিকি এ বয়সে ! একটা ঘরে আছি-এখনই ভাড়া দিতে না পারলে তাড়িয়ে দেবে বলেছে। তাই বলছি। রাস্তা ছাড়া তখন যাব কোথায় ? -সুলোচনা কত দিন মারা গিয়েছে ? -এই চোদ্দ বছর। ঐ কোলের ছেলেটি যখন দু-মাসের- সেই থেকে মানুষ করছি। আমার হঠাৎ একটি কথা মনে হইল। সুলোচনাকে আমি জানিতাম বটে, কিন্তু তার আসল ইতিহাস আমার কাছে রহস্যাবৃত ছিল। আমি খানিকটা বুঝিতাম, খানিকটা বুঝিতাম না-তাহার। আর একটা কারণ, আমার বয়সও তখন কম ছিল। ৰূপসী সুলোচনা আমার কাছে চিরদিন নারীত্বের গহনা রহস্যের প্রতীক হইয়া আছে। এই উত্তম সুযোগ। বড় কৌতুহল হইল উহার মায়ের মুখে তাহার হাতিহাস সব শুনিব। বৃদ্ধাকে বলিলাম-আপনি শ্রদ্ধানন্দ পার্কে বসে থাকবেন কাল বিকেল পাচটার সময়-আমি আসব। বাড়ীভাড়ার ব্যবস্থা যা হয় করা যাবে। বুড়ি ছাডিল না, তাহার বাসা দেখিতে হইবে এখনই। অগত্যা গেলাম। বাসা দেখিয়া মনে হইল, তেমন ঘরে মানুষ থাকিতে পারে না, গরু থাকিলেও কষ্ট পায়। একতলায় ছোট্ট অন্ধকূপের মত ঘর, একটি মাত্র দোর, যেটা দিয়া ঢুকিতে হয়-দ্বিতীয় দরজা বা জানালা নাই। এই পচা ভদ্রে কি ভীষণ গুমটি ঘরের মধ্যে। মলোচনার ছেলেরা একটু পরে আসিল। বড় সুন্দর ছেলে দুটি । স্বালোচনার মুখচােখ ভুলিয়া গিয়াছিলাম ; ইহাদেৱ-বিশেষ কৰিয়া ছোট R