পাতা:বিভূতি বীথিকা - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৯১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বলে একেবারে নিবিড আলিঙ্গনে গৌর পিওনকে বুকে জডিয়ে ধরলেন দস্তুর মতো ‘সিন’ যাকে বলে। লোকে মজা দেখে খুব হাততালি দিয়ে উঠলো। তারপরই আডি তদার নৃপেন সরকার, বেচারী অতো হাততালিব পরেও বক্তা —জীবনে এই সর্বপ্রথম তিনি সভায় দশজনের উৎসুক দৃষ্টির সামনে দাড়িয়েচেন বেচারী প্ৰথমেই বলে ফেললেন, “আমরা একজন মহাপুরুষের বিদায় উৎসব সভায় একত্র হয়েচি।” যাকে বলা হচ্চে সে পৰ্যন্ত অবাক হয়ে গেলো । কবিরাজ মশাই সংস্কৃত শ্লোক আবৃত্তি করে সভাটাকে কুশণ্ডিক রি আসব কবে তুললেন । মানুষেব মধ্যে ব্ৰহ্ম বাস শ বেন, অতএব গৌব পিওন ছোটো কাজ করতো বলে সে ছোটো নয, সে ও ব্ৰহ্ম। উপনিষদেব ঋষিদেব তপোবনের এই আবহাওয়া বইযে দেবাব পরে প্রাইমারি স্কুলের পণ্ডিত বেচাবী মহা ফাপরে পডালেন, কিন্তু তার চেয়েও ফাপরে পডলে চামডার খটি ওয়ালা -- বীজবালি ਸ | স্কুলোেব পণ্ডিত ভালোমানুষ লোক, ইউনিযন বোর্ডেব ৮ে সিডেণ্টের গুণ ব্যাখ্যা কবে বক্তৃতা শেষ করলেন। নানা কাবণে তাকে বরেন দাবি দিকে চাইতে হয় । বুজিবালি বিশ্বাস বললে, “এ পর্যন্ত তার চিঠিগুলো ঠিকমতো বিলি করেচে। গৌর, অমন পিওন আর হয় না।” এইখানেই ইতি । আর কোনো কথা বোব। তয় না। তাব মুখ দিয়ে । ঘোমে উঠলে অব অসহাযভাবে এদিক-ওদিক চাই*ে লাগলো। পাবে হঠাৎ ধাপ করে বসে পড়ে বক্তৃতার উপসংহাব করলে । রামবিষ্ণু পাল বৃদ্ধ ব্যবসায়ী, সৎ লোক, গৌরকে তিনি বন্ধু বলে সম্বোধন করলেন। বাল্যে গৌর পাঠশালায র্তার সহপাঠী ছিলো, এইটুকু মাত্র বললেন। আমি এক মানপত্র লিখে এনেছিলাম, তাতে গৌব পিওনের সম্বন্ধে ভালো ভালো অনেক কথা বলা ছিলো। মানপত্র পডে। আমি সেটা গৌরেব হাতে দিলাম। সভাপতি বরেন দা ঘুঘু লোক, সভার গতি কোনদিকে সে অনেকক্ষণ বুঝেচে । সভাপতির অভিভাষণে সে গৌর পিওনের এমন সব গুণের বর্ণনা করে গেলো, যা সম্পূর্ণ কাল্পনিক। গৌর পিওন প্রকৃতই দেখলাম। লজ্জিত হয়ে উঠেচে, ওর মূখে ওই সব কথা শুনে বিস্মিত সে নিশ্চিতই হতো, কিন্তু তার বিস্ময়বোধের শক্তি আজ সে হারিয়ে ফেলেচে । Stry