পাতা:বিভূতি বীথিকা - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৯৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মনে মনে অভিমানে বড়ো ঘ্য লাগলো, বড়ো-মানুষের মেয়ে বটে, সুন্দরা ও বটে, কিন্তু আজ ছ-সাতদিন যে আমি তার বাপের বৈঠকখানার একখানা চেয়ার টেবিলের মতো বাইরের ঘরের এক কোণে পড়ে আছি, এতোদিনেব মধ্যে এ হতভাগ্যের সম্বন্ধে সে সংবাদটুকু কি তার কর্ণগোচর হয়নি ? দিন দুই কেটে গেল। এ কয়দিনে আমি নিজের কাজে ব্যস্ত হয়ে যথেষ্ট ঘোরাঘুরি করলাম, তাতে ঠিক সময়ে স্নানাহার হয়ে উঠতো না কোনোদিনও। সুতরাং বীণার সঙ্গে দেখা হবার সময় হতো না । তৃতীয় দিন সকালে বার হয়ে সন্ধার কিছু আগে ফিরে এলাম। বারান্দাটাতে বসে একটু বিশ্রাম করছি, অপ্রত্যাশিতভাবে বীণা ঘরে ঢুকে হাসি-মুখে বললে-ঠাকুর দু-বার তারপর আমি দু-বার আপনাকে ডাকতে এসে ফিরে গিয়েছি-আপনার খিদো-তেষ্টা কিছুই পায় না, কোথায় ছিলেন। সারা দিনটা ? আমি কৈফিয়ৎ দেবার আগেই সে আবার বলে উঠলো-মুখ হাত ধুয়ে ফেলুন, আপনার চা নিয়ে আসি-বাবা এখনও কাছারী থেকে ফেরেননি, গরম छल प्रgicनाई डांछ ’ অল্প পরেই সে চা নিয়ে এসে অভ্যস্তভাবে সামনের চেয়ারের হাতলটির ওপর বসে অনর্গল বকে যেতে লাগিল- সব কথার উত্তর পাবারও প্ৰত্যাশা সে রাখে না । আপনা-আপনিই বেশ বলে যেতে পারে । বললে--ভারী মজা হয়েছে, আমি আপনার একটা লেখা দিদিকে দেখিয়ে বললুম-পড়ে দেখো তো ! দিদি পডতে গিয়ে বুঝতে পারে না— দাডান সেখানা আনি••• আমার উত্তরের অপেক্ষা না করেই সে বাড়ীব্য মধ্যে চলে গেল, কিন্তু সেদিন আর সে বাইরের ঘরে দেখা দিলে না। বীণার খামখেয়ালি ধরন আমার জানা ছিল, কাজেই এতে আমি কিছুমাত্ৰ আশ্চর্য হলাম না । পরদিন সকালে সে এল-হাতে একখানা “বঙ্গ-বন্ধু’ । আমায় দেখিয়ে বললে-এই নিন, দিন দিকি বুঝিয়ে ? লাল পেন্সিলে দিদি দাগ দিয়েচে জায়গাগুলো। সেই মাসের “বঙ্গ বন্ধু-তে আমার ‘যৌথ-ব্যাঙ্ক ও মধ্যবিত্তের কর্তব্য’ প্ৰবন্ধটা বেরিয়েছিল। হাতে নিয়ে মনে মনে ভাবলাম, যদি ম্যাট্রিক ক্লাসের একটি মেয়েকেও তাক লাগিয়ে না দিতে পারলাম। তবে অনবরত দিন পনেরো ধরে ইম্পিরিয়াল লাইব্রেরি যাতায়াত এবং নানান Year-Book নাড়া-চাড়া করবার সার্থকতা আর কি হলো ? • বীণা বিকেল বেলা একখানি খাতা হাতে নিয়ে এসে বললে-চা-টা খেয়ে Y QR