পাতা:বিভূতি বীথিকা - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২০৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অল্পদিনে যে উপকরণে গাঁথুনি পাকা ও শক্ত হয়ে ওঠে, ওদের দিক থেকে অন্ততঃ "তার কোনো কাৰ্পণ্য তো ছিল না । মানুষের সঙ্গে মানুষের এ রকম সহজ সম্পর্ক আদান-প্ৰদান যে জীবনের কত বড়ো সম্পদ তা অনেক স্থলে আমাপ । বুঝিনে বলেই সকল সঙ্গন্ধকে ছোট করে দেখতে শিখি। মেয়ের এটা কেমন সুন্দরভাবে পারে, ওদের চরিত্রগত সেবা প্ৰবৃত্তি ও মুগ্ধ মনের সৌন্দৰ্য জগতকে যে কত দিন থেকে মঙ্গল ও কল্যাণে ভরে রেখেছে তার বাস্তবতা সেদিন নিজ - ডাক বাংলোর বরানন্দাতে বসে মনে-প্ৰাণে অনুভব করলাম । সব কথা বুঝিয়ে বলা যায় না। শুধু নক্ষত্রদল যখন অনন্ত অন্ধকাবেমধ্যে কঁপে ••• রাত্রি অপূর্ব রহস্যময় হয়-নৈশ পাখির ডাক দূর থেকে ভেসে আসে-মনের মধ্যেব নাম-না-জান উল্লাসে সে সত্যটুকু নিজের কাছে নিজে পরিস্ফুট হয়ে ওঠে। ডাক বাংলোয় ফিরে দেখি আমার এক পুরোনো বন্ধু আমার জন্য অপেক্ষা করছেন। তিনি ইন্সি ওরেন্সের দালাল, নারায়ণগঞ্জে কাজে এসেছেন এব।” সেখানেই আছেন । তার নামে তার একটা মনি অর্ডাব এসেছে কিন্তু সেখানকার পোস্টমাস্টার তাকে চেনেন না, তঁাকে সনাক্ত করব বা ও কেউ সেখানে নেই বলে টাকা দিচ্ছেন না । এদিকে তঁর হাতে ও এক পয়সা নেই।-- এখন কি করা যায় ? খুব ভোরের ট্রেনে বন্ধুকে নিয়ে নারায়ণগঞ্জে রওনা হলাম। যাবার সময় চৌকিদারকে বলে গেলাম। কেউ এসে খোজ করলে বলতে যে, আমি জরুলী কাজে নারায়ণগঞ্জে চলে গিয়েছি, আজই ফিরব । নারায়ণগঞ্জে কাটলো দিন দুই । মহা হাঙ্গামা ! পোস্টমাস্টার আমাকেও চেনেন না, টাকা ও কিছুতেই পাওয়া যায় না। দু’একজন যাদের সঙ্গে পূর্বে পরিচয়ু ছিল তারা টাকা-কড়ি1 হাঙ্গামা শুনে পেছিয়ে গেলেন । অনেক কষ্টে শেষে কাজ মিটলো । ডার্ক বাংলোয় ফিরেই আপিসের চিঠি পেলাম, বিশেষ দরকারে কুমিল্লা যেতে হবে। চিঠি এসে দুদিন পড়ে আছে, আগেই যাওয়া উচিত ছিল, বিলম্বে কার্যে ক্ষঙ্গি হওয়ার সম্ভাবনা । ডাক বাংলোর চাপরাশি বললে রঘু মিশির দু'দিন এসে ফিরে গিয়েছে। এদিকে ট্রেনের সময় সংক্ষেপ, ফেরবার পথেই বীণার সঙ্গে দেখা করা ঠিক করলাম । কুমিল্লা থেকে যেতে হল চাটগাঁ, সেখান থেকে ষ্টীমারে বরিশাল, সেখান থেকে কলকাতা । - R O R