পাতা:বিভূতি বীথিকা - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চল্লিশের কম নয়। কিন্তু দেখায় ত্ৰিশ । সোনালীপাড় দামী রেশমী অঙ্গাবরণ দুটি বিভিন্ন খণ্ডে বিভক্ত হয়ে ওর গৌর অঙ্গের শোভা বর্ধিত করছে। কিন্তু মাথায় গ্ৰীক মহিলাদের ন্যায় পুষ্পমাল্য, সুন্দর চোখের তুরু কাশ্মীরি জাফরাণের বেণু, চন্দন ও বার্চ বৃক্ষের আট মিশিয়ে চিত্রিত করা। তাতে চোখের ভুরু দুটি কালো না দেখিয়ে হলদে দেখাচ্ছে। নিয়ারার পিতা ব্যাকট্রিয়ান গ্ৰীক, কিন্তু মাতা পারস্যদেশীয়া । ন্যনিফাসের কথার উত্তরে নিয়ারা বললে-আমার গুরু এসেছেন, তাই আনন্দে কথাবার্তা বলছিলাম। তার সঙ্গে । ন্যানিফাস বললে-সে আবার কে ? -তিনি একজন ভারতীয় যোগী । বারাণসী থেকে এসেছেন । সবাই একবাক্যে বলে উঠল-আমরা একবার দেখব-তিনি কাউকে দেখা দেন না। কারও কাছে কিছু চান না তো তিনি। ন্যানিফাস বললে-আচ্ছা নিয়ারা, তুমি একজন এদেশী ধাপ্লাবাজের পাল্লায় পড়ে গেলে কি বলে ? এ যে-রকম শুরু হল দেখছি, কবে আমাদের বন্ধু ডিওন মুণ্ডিতমস্তকে বৌদ্ধ ভিক্ষু না হয়ে দাঁড়ায় ! সুরাপায়ী বিলাসী স্থূলদেহ ডিওন পঙ্ককেশে পুষ্পমাল্য ধারণ করে একপাশে পৰ্যঙ্কে শুয়ে ছিলেন, তঁাকে মুণ্ডিতমস্তক বৌদ্ধ ভিক্ষুর বেশে কল্পনা করে সর্বপ্ৰথমে প্রৌঢ় সুন্দরী নিয়ারা হি-হি করে হেসে গড়িয়ে পড়ল, পরে ডিওনের সব বন্ধুই সেই হাসিতে যোগদান করল । এমন সময়ে দেখা গেল, একজন দীর্ঘদেহ কৌপীনধাৱী লোক, সর্বাঙ্গে বিভূতি মাথা, হাতে কুমণ্ডলু, আয়ত চক্ষুদ্বয় জ্যোতিষ্মান-কোন সময়ে ছাদেব ওপর এসে দাঁড়িয়েছে। সকলে চমকে উঠল। ডিওন বললে-কে তুমি ? সস্যাসী বললেন-বাবাজীদের জয় হোক । --কি ? • • • • • এ উত্তর শুধু ডিওন দিলেন। -এই মেয়েটি আমায় বড় মানে। আমি একে এই পাপীজীবন থেকে উদ্ধার করতে চাই, আপনারা এখানে আর আসবেন না। -কোথায় যাব আমরা ? তুমি কোন নবাব এলে জানতে পারি কি ? সন্ন্যাসী রোষকষায়িত নেত্রে বললেন-বৃদ্ধ লম্পট। পরকালের দিন সমাগত, ভয় হয় না ? এখনও এই সব- ' R) )