পাতা:বিভূতি বীথিকা - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২২২

মাত্ৰ-তাতে বিদেশী, বিধর্মী-অন্যদিকে প্ৰবলপ্ৰতাপ মহারাজ ভাগাভদ্রের কন্য 〔可··· 甲 বৈশাখের শেষের দিকে গ্রীষ্মের দাবদাহ। আরও বেড়েছে, হেলিওতোরাস কি মনে করে অপরাঙ্কের দিকে সেই উদ্যানবাটিকাতে যাদৃচ্ছিাক্রমে ভ্ৰমণ করতে করতে গিয়ে হাজির হল। পঙ্ক আম্রফলের গন্ধ বৈশাখ-অপরাহ্রের উষ্ণ বাতাসে। সেই পাষাণবেদীতে আগেকার আরও দু’বারের মত এবারও বসল। দু’বার নিম্বফল হয়েছে এই বৃথা প্ৰতীক্ষা, এবারও হবে সে জানে। তা নয়, সেজন্যে সে আসে নি-কিন্তু এই লতাগৃহের বাতাসে যেন তার দেহগন্ধ মিশিয়ে আছে-পঙ্ক আম্রফলের গন্ধ যেমন মিশে রয়েছে এই নিদাঘ-অপরাহের বাতাসে। সে স্বপ্ন দেখতে চায় -- ভাবতে চায়-কোথাও কোন সুখী প্রেমিক যুগল এমনই জনহীন নিস্তব্ধ সন্ধ্যায় পরস্পরের হাত ধরে যুখীবনে বিচরণশীল--- কত কথা, কত প্ৰণয়-গুঞ্জন, কত চুম্বন উভয়ের মধ্যে। সে আর রাজকন্যা মালবিকা । - এমন যদি কোনদিন-- ভাবতে ভাবতে বোধ হয় তার তন্দ্ৰাকর্ষণ হয়ে থাকবে। গরম তো বটেই • • হঠাৎ যেন একটি সুন্দর হাস্যমুখ কিশোরমূর্তি তার সামনে এসে দাড়িয়ে তাকে এক ঠেলা দিয়ে জাগিয়ে তুলে বললে- আমি কতকাল অপেক্ষা করব তোমার জন্যে ? ওঁঠ, ওঠ-কত এলোমেলো স্বপ্ন থাকে মাথায় ! হেলিওডোরাস জেগে উঠল। দেবীর গায়ে তার খড়গখানে ঠেসানো রয়েছে, তাতে নিয়ে বাগানের বাইরে তার রথের কাছে এল । সত্যিই সে উদভ্ৰান্ত, এমন অবস্থায় সে বেশিদিন এখানে কাটাতে পারবে না । পাগল হয়ে যাবে নাকি শেষে ? পথে পা দিতেই একটি বৃদ্ধ ভিক্ষুক ওর কাছে ভিক্ষা চাইল। অন্যমনষ্কভাৰে কিছু মুদ্রা ওর হাতে দিতে গেল। দেখলে, সেটি একটি স্বর্ণমুদ্রা-ফিরিয়ে নিতে যাবে, কিন্তু পবক্ষণেই অপরিসীম ঔদাসীন্যের সঙ্গে মুদ্রাটি ভিক্ষুকের হাতে ফেলে দিল । কি হবে অর্থ তার জীবনে ? নীরস জীবন, মরুময় জীবন। পিতা ভিণ্ডন সুখে থাকুন, কিন্তু তার বংশের পাপ • প্রজাদের অর্থশোষণ, তাদের উপর অত্যাচার ভিক্ষুক স্বর্ণমুদ্র হাতে পেয়ে অপ্রত্যাশিত আনন্দে উচ্ছসিত কণ্ঠে বলে উঠল-বাসুদেব আপনার মনোবাঞ্ছা পূর্ণ করুন! RS