পাতা:বিভূতি বীথিকা - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আলো হয়ে ওঠে দাহুমান শস্তক্ষেত্রের বা গ্রাম-জনপদের বাসগৃহের রক্ত অগ্নিশিখায়। মানুষ নৃশংস হত্যার লালসায় ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছে। যুধ্যমান সৈন্যবাহিনীর নির্মম রথচক্রেতলে শত শত নিরীহ নারী, শিশু, অসহায় বৃদ্ধ পিষ্ট হয়ে মোেদরক্তে পথের ধুলি কর্দমাক্ত করে তোলে। সর্বগ্রাসী প্ৰলয়দেব করাল কৃপাণ দু’হাত বন বন করে ঘোরান-শাণিত খড়েগর ফলকে সুৰ্যকিরণ ঠিকরে পড়ে। কপিলার উত্তর ভাগ শ্মশান হয়ে গেল। এই তিন বৎসরে। গভীর নিশীথে সেখানে মুণ্ডমালিনী কপালিনী কালভৈরবীর রক্তসিক্ত জিহবা লক লক করে অন্ধকারে । শিবাদলের অমঙ্গল চিৎকারে অন্তরাত্মা কঁপে । একটি খণ্ডযুদ্ধে হেলিওডোরাস স্কুণদের হাতে বন্দী হল। কেন তারা তাকে হত্যা করল না। সে নিজেই জানে না । অবাক হয়ে গেল সে। পশুচর্মের তাঁবুতে উটের দুধ ও ছাতু খেয়ে পযুসিত পশুমাংস খেয়ে সে এক মাস অতি কষ্টে কাটাল। প্রতিক্ষণেই মৃত্যুর প্রতীক্ষা করে- অথচ কেন তাকে ওবা মারে না কে জানে। একদিন সে শুয়ে আছে তাঁবুতে, স্বপ্ন দেখলে, এক সুন্দর তরুণ তাকে ঠেলা মেরে উঠিয়ে বলছে-আমার সঙ্গে এস, আমি তোমায় পথ দেখিয়ে দিচ্ছি পালাবার । বাইরের অন্ধকার ছুরি দিয়ে কাটা যায়। এখানে ওখানে হ্রণ-প্রহরীদের অগ্নিকুণ্ড । আবছায়া অন্ধকারে চলেছে দুজনে-তরুণ আগে, ও পেছনে । - পথপ্ৰদৰ্শক তরুণের মূর্তি অন্ধকারে অস্পষ্ট, ভাল দেখা যায় না। সম্মুখেই অজিরাবতী নদী । • • • --নাম, নাম, জলে নাম। মাভৈঃস্বপ্নাচ্ছিন্নের মত নামছে হেলিওডোরাস। কনকনে বরফগলা জল, প্ৰথমে এক হাঁটু পরে কোমর, তার পরে এক গলা । আগে যে যাচ্ছে সে বলছে-ভয় নেই। চলে এস । এই জায়গায় নদীর জল কম, চিনে রাখ, এই শালগাছ। ডুবে যাবে না। এক গলা জলে পড়তেই হেলিওডোরাসের ঘুম ভেঙে গেল। ভোর হয়েছে। স্বপ্নের কথা ভাবলে । কে এই কিশোর, একে সে কোথায় আরও স্বপ্নে দেখেছে-পরিচিত মুখ। হঠাৎ মনে পড়ল সেই বিদিশার প্রাচীন উদ্যানবীথি- এই ব্যাপীতটি (স্বপ্নযোগে উদভ্ৰান্ত সে একদিন একেই দেখেছিল। ) - কেন সে বার বার এই কিশোরকে স্বপ্নে দেখে ? কে এই তরুণ ? সারাদিন সে স্বপ্নের কথা ভাবলে। তার দৃঢ় বিশ্বাস হল, আজ রাত্রে RR