পাতা:বিভূতি বীথিকা - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২২৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সে পালাতে চেষ্টা করবে। সে কৃতকাৰ্য হবে। গভীর নিশীথে তাবুর বার হয়ে এল সে-হাতে পায়ে শৃঙ্খল ছিল না। আসবপানমত্ত হুণ প্রহরীরা অগ্নিকুণ্ডের ধারে তন্দ্ৰামগ্ন। অদূরে অজিরাবতী নদী, ওই সেই শালগাছ। নিঃশব্দে জলে নেমে চক্ষের নিমেষে সে ওপারে উঠল গিয়ে শালবনের মধ্যে কুজ বিষ্ণুবর্ধনের স্কন্ধাবারে । যুদ্ধ শেষ হয়ে গেল সেই শীতকালের প্রথমেই। দীর্ঘকাল পরে হেলিওডোরাস তক্ষশিলায় ফিরল। মাসখানেকের মধ্যেই রাজার কাছে প্রার্থনা জানিয়ে মালবে সে পূৰ্বপদে ফিরে এল। কিসের যেন আকর্ষণ, কে যেন টানে। একদিন সে নগরীর বাইরে বেডাতে বেড়াতে সে উদ্যানবাটিতে প্ৰবেশ করলে। সেই শৈবালাচ্ছাদিত পাষাণবেদী, সেই লতাগৃহ, সেই যক্ষমূর্তিশোভিত বাপীতটি —সব তেমনই আছে। যেন কত কাল আগের স্বপ্ন । একদিন সেই রূপসীকে যেন স্বপ্নে দেখেছিল। এখানে-সেই বসন্তকালেৰ পুস্পসৌরভ, সেদিনকার সে সন্ধ্যাট--সব যেন হিপোলিটাসের সেই করুণ কবিতাটি স্মরণ করিয়ে দেয়-“আপেলগাছের ছায়া, রূপসী-কণ্ঠের গান, সুবর্ণের দুৰ্গতি'-প্ৰথম যৌবনের হারানো দিনগুলির দূরাগত বংশীব্বনি! তা ভারতীয় দেবতা বাসুদেব ! তোমার পাষাণ-দেউলের মত তুমিও কি কঠিন ? কিংবা আমি গ্ৰীক বলে, বিধর্মী বলে, আমায় অবহেলা করলে ? কথা কানে তুললে না ?--সে আজ নেই। সে রূপসী কোনও দূর রাজ্যের রাজমহিষী ৷ জীৱনে আর তার সঙ্গে দেখা হবে না, সে জানে। কেউ বসে নেই তার জন্যে তিন ৰৎসৱ পাৱে । (? আবার বসন্তকাল। সুদীর্ঘ তিন বৎসর পূর্বে এই বসন্তকালে এই সময় মালবিকার সঙ্গে প্ৰথম সাক্ষাৎ হয়েছিল। হেলিওডোরাস কি মনে করে এবার ঠিক তেমনি প্ৰস্ফুটিতকুসুমগন্ধে আমোদিত পথ দিয়ে যেতে যেতে রথ থামিয়ে সেই উষ্ঠানটিতে প্ৰবশ করলে। কতদিন এখানে আসে নি। সম্পূর্ণ বাস্তব এই পাষাণবেদী। স্বপ্ন তো নয়-বিশাল রাজপুরীর অন্তঃপুৱ-প্ৰান্তে সেই রূপবতী তরুণী রাজনন্দিনীও তো স্বপ্ন নয়। এখানে এসে তবুও যেন কেমন R R R