পাতা:বিভূতি বীথিকা - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৩২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নৃপতি ভাগভদ্ৰ প্ৰথমে আপত্তি করেছিলেন, কিন্তু শেষ পৰ্যন্ত তিনি হঠাৎ কেন এ বিবাহে সম্মতি দিলেন তা কেউ জানে না । স্বয়ং মহারানী পট্টদেবী কুমারললিতা তার খবর রাখেন। সেদিন নিশিথরাত্রে রাজা ঘৰ্মাক্ত-কলেববে পর্যন্ধ থেকে ধড়মড় করে ঘুম ভেঙে উঠলেন । রাজী ব্যস্তভাবে বললেন--কি হয়েছে গো, অমন করছি কেন ? -একটু জল দাও-উ:, কি ভীষণ । জল দাও— · রাজ্ঞী স্বর্ণতৃঙ্গারু থেকে জল দিয়ে বললেন-কি হয়েছে- কি হয়েছে ? নৃপতি এক দুঃস্বপ্ন দেখেছেন। এক চণ্ডপুরুষ তার কাছে এসে এক বিশাল শূল আস্ফালন করে হুংকার দিয়ে বলছেন- রে ভাগভদ্র, আমি কে চেন ? তোমার বংশের কুলদেবতা । হেলিওডোরাসের সঙ্গে তোমার কন্যার বিবাহে যদি সম্মতি না দাও, তবে তোমার মালবিরাজ্য এই শূলেব আগায় উড়িয়ে দক্ষিণ সমুদ্রে ফেলে দেব। ও আমাব জন্ম-জন্মান্তবের ভক্ত। বলেই সেই চণ্ডপুরুষ কি ভীষণ হুংকার ছাডলে! • শূলের অগ্রভাগ থেকে রক্ত অগ্নিশিখা যেন দাউ দাউ করে পরিব্যাপ্ত হয়ে পডল। ঘরে ঘরে-উঃ, কী ভীষণ দুঃস্বপ্ন ! বাজ্ঞী বললেন-বেশ তো । হেলিওডোরাপ সুন্দর ছেলেটি, তাকে আমি দেখেছি-মালবিকার সঙ্গে বড় সুন্দর মানাবে। তোমার মেয়েরও সম্পূর্ণ शै05छ --বেল কি রাজ্ঞী ! মেয়ে কি ওকে দেখেছে ? রাজী হতাশার সুরে হাত-দুটি শূন্যের দিকে ছুড়ে বললেন-নিৰ্বোধি নিয়ে ঘর করা যায় তো অল্পবুদ্ধি নিয়ে ঘর করা চলে না-কথাতেই বলেছে। ওরা হল আজকালিকার মেয়ে—আর কি আমাদের মত সেকাল আছে ? কোন অমত ক’রো না। হেলিওডোরাস আমাদের ধর্ম গ্ৰহণ করবে বিয়ে হলেই, তুমি দেখো । আর ও-রকম আজকাল তো হচ্ছেই। তক্ষশিলায় আমার এক পিসতুত বোনের ননদের যে একজন গ্ৰীক তালুকদারের সঙ্গে বিয়ে হয়েছে অতএব হেলিওডোরাসের সঙ্গে মালবিকার বিবাহে বাধা রইল না । পিতা ডিওন পত্রবাহকের হাতে লিখে পাঠালেন—খুব সুখের কথা বাবা, আমি তোমাকে এক পয়সাও দিয়ে যেতে পারব না । নিজের আখের যাতে ভাল হয় তাই কর। অর্থই গান্ধারের আপেল, কপিলার সুরা এবং কাশ্মীরি শাল । রাজকন্যাকে বিবাহ করা, ক্ষতি নেই, আখের দেখে, দিও। RR