পাতা:বিভূতি বীথিকা - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

য়েছিল, যা আজ দেড় হাজাব বৎসৱ ধরে স্বকীয় আলোয় উদ্ভাসিত, কত শত নীিষীর ভাষ্য টীকা-টপ্পানীর অর্ধপুষ্পে যা এই দীর্ঘ দিন ধরে স্বজিত হযে এসেচে-আজ আমাদের দুৰ্ভাগ্য সেই দেশেব সাহিত্যের আদর্শ আমাদেব আমদানি করতে হয়। সমুদ্রপারের দেশ থেকে। সাংবাদিকতা ও সাহিত্য যে এক জিনিস নয়, একথা আমরা ভুলতে বসেচি। সেদিনও আমাদের মধ্যে ছিলেন ববীন্দ্রনাথ ; যে শুদ্ধ নির্মল পরিবেশ ও উদার শুভবুদ্ধি শিল্প-মানসব একমাত্র একান্ত"প্ৰয়োজনীয়, তিনি তার আদর্শ স্থাপন করে গিয়েছেন তাব জীবনব্যাপী সাধনার মধ্য দিয়ে ; তব তপস্যাস্তব্ধ, মৌনমুখর মুহূর্তগুলির মধ্যে দিয়ে দিনশেষের কল্যাণ-রাগিণী কেমন নানাভাবে অকাপের ও বন্ধপেবা ঐশ্বৰ্য বিস্তাব করেচে। তার লেখনীর লীলাবিলাসেবী ছন্দে, আমবা সাহিত্যকে পলিটিকসেব দিন-মজুৰীতে নিয়োগ করার পূর্বে একথা যেন একবার ভেবে দেখি । এত কথা বলবার কারণ যে সম্পূৰ্ণৰূপে ঘটেচে এমন উক্তি আমি করচি না । বাংলা সাহিত্য আজ যেখানে এসে দাডিয়েচে, একথা নিঃসঙ্কোচে বলা যায় যে ভারতীয় অন্যান্য প্রাদেশিক সাহিত্যের তুলনায় সেটি একটি বিশিষ্ট স্থান । অন্যান্য প্রদেশেব সাহিত্য-রাসিকগণ বাংলা সম্বন্ধে কৌতুহলী হয়ে উঠেচেন এবং মূল বা অনুবাদের সাহায্যে তারা রবীন্দ্ৰ-পরবর্তী বাংলা সাহিত্যেব সঙ্গ নিজেদের পরিচয় স্থাপন করতে ব্যগ্র, এ আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতালব্ধ তথ্য । সেজন্যেই আমাদের অবহিত হতে হবে যেন আমরা সাময়িক উত্তেজনার মোহে পথভ্ৰান্ত হয়ে না পড়ি। ভারতীয় আদর্শ অমান রাখবার দায়িত্ব আমাদেবই হাতে-একথা আমরা যেন না ভুলি। নিজেদেব অভিজ্ঞতার আলোকে যেন পথ দেখে নিয়ে চলি সত্য ও সুন্দরের পেছনে, সাময়িক হুজুক থেকে নিজেদের যেন যথাসম্ভব দূরে রেখে চলি। দেশপ্রেমের এ আর এক দিকের বিকাশ স্পষ্ট কণ্ঠে একথা প্রচার করতে যেন লজ্জিত না হই । আবার রবীন্দ্রনাথের কথা তুলতে হয়। সাহিত্যে কত বড় আদর্শ তিনি আমাদের সামনে তুলে ধরে রেখে গেলেন। আজ আমরা রবীন্দ্রনাথেৰ স্মৃতি রক্ষা করচি, ঘরে ঘরে, কিন্তু রসক্ষেত্রে বা শিল্পের ক্ষেত্রে তার পূজা ওভাবে হবে না । হবে যখন আমরা ববীন্দ্ৰ-সাহিত্যের আলোক-বন্তিক হস্তে শ্রেযোং পথে দৃঢ়পদে অগ্রসর হব। সে যে কত বড় সম্পদ সে যে কত বড় আদর্শ তাৎ সম্যক মাপকাঠি এখনো আমাদের মধ্যে গড়ে ওঠেনি। তাকেও আমর্ব অনেকটা হুজুকের পর্যায়ে এনে ফেলোচি। RVe