পাতা:বিভূতি বীথিকা - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩৩২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

একেবারে নেতিয়ে পড়লো গাড়ির মধ্যে। আমানুল্লা নেমে এসে লরিতে ড্রাইভারের পাশে বসলেন। সৌভাগ্যক্রমে ঘণ্টা-দুইয়ের মধ্যে কালাত থেকে করাচীগামী, ব্রিটিশ গবর্নমেণ্টের ডাক মোটরের সঙ্গে আমাদের দেখা হোল । ডাক পাহারা দেবার জন্যে সঙ্গে একখানা সঁাজোয়া গাড়ি, কারণ ঐ সময়টা বেলুচ দস্যদের বড় উৎপাত চলছিল মরুভূমির পথে। একদিনে চামান, পরদিন দুপুরে করাচী। ঠিক হোল সেখান থেকে ট্রেনে রাজা রানী বম্বেতে যাবেন। আমরা ফিরলাম সেইদিনেই কাবুলে। জনপিছু দুশো টাকা বকশিস মিললো, গাড়িভাড়া ও তেলের দাম বাদে । বিদায় নেবার সময় অমানুল্লা আমাদের প্ৰত্যেকের সঙ্গে করমর্দন করলেন । বললেন-যদি কখনও ফিরি, তোমাদের ভুলবো না । চেয়ে দেখি রানীমার চোখে জল । আমাদেরও চোখ সে সময় শুষ্ক ছিল না, বোধহয় কঠোবপ্ৰাণ দুর্ধর্ষ জাঠি পূৰ্বাণমলেবিও না, নইলে সে অন্যদিকে মুখ ফিরিয়ে ছিল কেন ? বাম আমার যখন বাইশ বছর বয়স-তখন নানা দেশ বেড়ানোর একটা কাজ জুটে গেলো অদৃষ্ট। তখন আমি দৈব-ওষুধের মাদুলি বিক্রি করে বেড়াতুম। চুচড়োর শচীশ কবিরাজের তরফ থেকে মাইনে ও বাহা খরচ পেতুম। অল্প বয়সের প্রথম চাকরি, খুব উৎসাহের সঙ্গেই করতুম | আমাকে কাপড়চোপড় পরতে হতো সাধু ও সাত্ত্বিক বামুনের মতো। vess ছিলো ব্যবসায়ের অঙ্গ। গিরিমাটির রঙে ছোপানো কাপড় পরনে, পায়ে ক্যাম্বিসের জুতো, গলায় মালা, হাতে থাকতাে একটা ক্যান্বিসের ব্যাগ, তারই মধ্যে মাদুলি ও অন্যান্য ওষুধ থাকতো। বছর-তিনেক সেই চাকরি করি, তারপর শরীরে সইলো না বলে ছেড়ে দিলুম। একবার যাচ্ছি। বর্ধমান জেলার মেমরি স্টেশন থেকে মাখমপুর নামে এক গ্রামে। এটা মাদুলি বিক্রির জন্য নয় ; মাখমপুরে শচীশ কবিরাজ, মহাশয়ের শ্বশুরবাড়ি। সেখানকার জমিজমার ওয়ারিশান দাড়িয়েছিলেন শচীশবাবু VR