পাতা:বিভূতি বীথিকা - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উত্তেজিত। এবার ও সে কুঠুরির মধ্যে ঢুকে এটা-ওটা সরাতে লাগলো এবং আমার দিকে চাইতে লাগলো, তারপর হঠাৎ রান্নাচািলার দরজায় এসে চকিতদৃষ্টিতে চারিদিকে চেয়ে কেউ নেই দেখে আমার দিকে আরও 3 ā এবং নীচু-স্বরে বললে, “ঠাকুবমশায়, আপনি এখনই এখান থেকে পালান, না। হলে ভয়ানক বিপদে পড়বেন -এবা ফাস্থডে ডাকাত, রাতে আপনাকে মেরে ফেলবে’-বলেই চট করে বাডীর মধ্যে চলে গেলো। শুনে তো আমি আব্ব নেই। হাতেব খুন্তি হাতেই রইলো, সমস্ত শরীর দিয়ে যেন বিদুৎ খেলে গেলে । বলে কি ? দিব্য গেংস্তবাডী, গোলাগালা, ঘরদোর-ডাকাত কি রকম ? কিন্তু পালাবোই বা কেমন করে ? এখন বেশ বাত হযোচে। সামনের চণ্ডীমণ্ডপে বৃদ্ধ বসে লোকজনের সঙ্গে কথা কইচে —ওখান দিয়ে যেতে গেলেই তো সন্দেহ কববে | কাঠের মতো আড়ষ্ট হয়ে গিয়েচি একেবারে - হাতে-পায়ে জোর নেই, কিছু ভাববারও শক্তি লোপ পেয়েচে । মিনিট-পাঁচেক এমনিভাবে কাটলো —এমন সময়ে দেখি সেই বৌটি আবার কি-একটা কাজে কুঠুরির মধ্যে ঢুকে • খোলা দরজা দিয়ে আমার দিকে চেয়ে দাডিয়ে বইলো । মেয়েটি কথা বলবার আগেই আমি বললুম, “তুমি যেই হও, তুমি পরম দয়াময়ী-বলে দাও, কোন পথে কিভাবে পালাবো।--” বৌটি চাপা গলায় বললে, “সেইজন্যেই এলুম। সব দেখে এলুম। পালাবার পথ নেই। —ওরা ঘাটি আগলে রেখেচোঁ--” আমি বললুম, “তবে উপায় ।” মেয়েটি বললে, “একটা মাত্র উপায় আছে । তা ও আমি ভেবে এসোচি । আমি এ-বাড়ীতে আর ব্ৰহ্মহত্যা হতে দেবো না। --অনেক সহ করেচি, আর করবো না।--দাঁড়ান। ঠাকুরমশায়, আর একবার বাড়ীর মধ্যে থেকে আসি, নইলে সন্দেহ করবে। ” আরো মিনিট-পাঁচেক পরে বৌটি আবার এলো, চকিতদৃষ্টিতে চারিদিকে চেয়ে বললে, “শুনুন উপায়—এই কথা ক'টা মনে রাখুন। যদি মনে রাখতে পারেন, তবে বাচাতে পারবো। --আমার নাম বামা, আমি এ-বাড়ীর সোজো-বেী, আমার বাপের বাড়ীর গ্রামের নাম কুসুমপুর, জেলা বর্ধমান, থানা রায়নাআমার বাপের নাম হরিদাস মজুমদার, জ্যাঠামশায়ের নাম পাঁচকডি মজুমদার, NO)