পাতা:বিভূতি বীথিকা - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

লোকটার গলার সুরে একটা কি শক্তি ছিল, গঙ্গাধরের মন খানিকটা ভিজল । কোকেনের ব্যবসাতে মানুষে- বা তারাতি বড মানুষ হয়েচে বটে। বিনা সাহসে, বিপদ এডিয়ে চলে বেডালে কি লক্ষ্মীলাভ হয় ? দেখাই যাক না । হঠাৎ গঙ্গাধর চেয়ে দেখলে যে লোকটা নেই। সেখানে। এই তো দাডিয়ে ছিল, কোথায় গেল। আবার ? পাছে কেউ শোনে, এই ভয়ে বেশি জোরে ডাকতে সাহস পেল না। চাপা গলায বাঙালী হিন্দিতে ডাকলে-কোথায় গিয়া ও খ্যা সাহেব ? এদিক ওদিক চাওয়ার পর সামনে চাইতেই দীর্ঘাকৃতি আলখাল্লাধাবী থা সাহেবকে দাডিয়ে থাকতে দেখা গেল। গঙ্গাধর বললে-জলদি বলো, রাত হো গিয়া। অনেক দূর যানে হোগা। কি একটা যেন ঢাকবার জন্য লোকটি প্ৰাণপণে চেষ্টা করচে । বললে - আমাব সঙ্গে এসো, মাল দেখাবো । দুজনে কাটিগঙ্গার ধারে ধারে অনেকদূর গেল। যে সময়ের কথা বলচি, তখন ওদিকে অত লোকজন ছিল না । মাঝে মাঝে জোযাব নেমে যাওয়াতে বড় বড় ভড ও নৌকা ডাঙায় কাদার ওপর পডে আছে, দু’ একটা কবাতের কাবখানা, তাও দূবে দূবে-জলেব ধারে নোনা চান্দা কাটার বন, পেছনে অনেকদূবে খিদিরপুং বাজারের আলো দেখা যাচ্চে। পথে যেতে যেতে থা সাহেব একটা বড় অদ্ভুত প্রশ্ন করলে। গঙ্গাধবেব দিকে চেযে বললে -আমান্য দেখতে পাচ্চ তো ? -কেন পাবো না ? এমন বয়েস এখনো হয়নি যে এই সন্দেবেলাতেই চোখে ঠাওর হবে না । একবার গঙ্গাধর জিগ্যেস করলে-তোমাব ডেরা কোথায় খ্যা সাহেব ? লোকটা চকিতে পিছন ফিরে সন্দিগ্ধ দৃষ্টিতে চেযে বললে-কেন, সে তোমার কি দরকার ? পুলিশে ধরিযে দেবে ভেবে থাকে। যদি, তবে ভাল হবে না জেনো। মাল দেবো, তুমি টাকা দেবে-মাল নিযে চলে যাবে-আমার বাসাব খোজে তোমার কি কাজ ? লোকটার চোখেব চাউনি কি অদ্ভুত! গঙ্গাধব অস্বস্তি বোধ করলে। মুখ ভালো দেখা যায় না-কিন্তু ওরা দুই চােখে যেন ইস্পাতের ছুরি ঝলসে উঠল। না, সঙ্গে তার টাকা রয়েচে, এ অবস্থায় একজন সম্পূর্ণ অপরিচিত অজ্ঞাতকুলশীল লোকের সঙ্গে একা এই সন্ধ্যাবেলাতেই সে এতদূর এসে পড়েচে? লোভে মানুষের জ্ঞান থাকে না-তার ভেবে দেখা উচিত ছিল। কিন্তু যখন VVN