পাতা:বিভূতি বীথিকা - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গাবকাঠের পুতুল তৈরি করতে হয়েচে গ্ৰাম্য ছুতোর দিয়ে, তেল সিদুর লেপে সেটাকে তেমাথা রাস্তায় পুতিতে হয়েচে-হাঙ্গামা কি কম ? সে যত বিদঘুটে ফরমাশ করে, গ্রামের লোকের তত শ্ৰদ্ধা বেড়ে যায়। তার ওপরে। ওর কানে গেল লোকে বলাবলি করচে-বলি, একি তুই যা তা পেলি রে ? ওঁর পেটে এলেম কত ? যাকে বলে পণ্ডিত ! একি তুই বাগান গার দীক্ত ভট্টচায পেয়েচিস ? গঙ্গাচরণ হেঁকে বললে-নিষ্কালি সত্বা দু’খানা আর শ্বেত আকন্দের ऊांक फू}|- ঠিক দুপুর বেলা, এখন এ সব জিনিস কোথা থেকে যোগাড় হয়, আবু কেই বা আনে! সবাই মুখ চাওয়া-চাওয়ি করতে লাগলো। একজন বিনীতভাবে বললে-আজ্ঞে, এ গায়ে তো কুমোর নেই, নিষ্কালি সরা এখন কোথায় পাই ? গঙ্গাচরণ রাগের সুরে বললে—তবে থাকলো পড়ে, ফাঁকি-জুকির কাজ আমায় দিয়ে হবে না । গা বন্ধ করতে নিষ্কালি সরী লাগে এ কথা কে না। জানে ? আগে থেকে যোগাড় ক’রে রেখে দিতে পারো নি ? গ্রামের লোকে নিজেদের অজ্ঞতায় নিজেরাই লজ্জিত হয়ে উঠলো। বলাবলি করলে--এ খাটি লোক বাবা । এর কাছে কোন কাজের ফাকি নেই । যেভাবে হোক। সারা এনে দিতেই হবে । নানা অপরিচিত অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে বেলা দু’টোর সময়ে প্রক্রিয়া শেষ হ’লো । গঙ্গাচরণ বললে- সবাই এসে শান্তিজল নিয়ে যাও— খুব ঘটা ক’রে শান্তিজাল ছিটিয়ে দিয়ে গঙ্গাচরণ গম্ভীর মুখে বললে-এন্ধান্ম আসল কাজটি বাকি উপস্থিত সকলে এ ওর মুখের দিকে চায়। সকাল থেকে ফাইফরমাশের চোটে প্রত্যেকে হিমসিম খেয়ে গিয়েচে, শান্তিজল পৰ্যন্ত ছিটানো হয়ে গেল, তবুও এখনও আসল কাজটি হোলো না । বেলা তিনটে বাজে৷ এদিকে । গ্রামের মাতব্বর লোক এক-আধজন এগিয়ে বললে-অজ্ঞে, কি কাজের কথা বলচেন পণ্ডিত মশাই ? -ঈশান কোণে নিমগাছ আছে। এ গায়ে ? -আজ্ঞে কোথায় বললেন ? VV)