পাতা:বিভূতি বীথিকা - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কেমন ধরনের চকচক করচে। শীর্ণ, চেহারা শুধু বোধ হয় না খেয়ে খেয়ে । অনঙ্গ-বৌয়ের মনে মমতা জন্মালো। তাদের যদি অবস্থা থাকতো দেবার, ইচ্ছে হয় রোজ ওই অনাহারশীর্ণ দরিদ্র পণ্ডিত মশাইয়ের পাতে এমনিতর নানা ব্যঞ্জন সাজিয়ে খেতে দেয় । -আসি বৌমা, আপনাদের কথা ভোলবো না কখনো। বাড়ী গিয়ে মনে রাখবো । অনঙ্গ-বৌয়ের চোখ দু'টি অশ্রুসজল হয়ে উঠলো। -যদি কখনো না খেয়ে বিপদে পড়ি, তুমি একটু ঠাই দিও মা অন্নপূর্ণ। अ७छ १बौद अभि । দুৰ্গা পণ্ডিতের অপসৃয়মাণ ক্ষীণদেহ আমশিমূলের বনের ছায়ায় ছায়ায় দূত্র থেকে দুৱান্তরে গিয়ে পড়লো অনঙ্গ-বৌয়ের স্নেহ-দৃষ্টির সম্মুখে। সেদিন এক বিপদ । রাধিকানগরের বাজারে পরদিন বহুলোকের সামনে পাচু কুণ্ডুর চালের দোকান লুঠ হলো। দিনমানে এমন ধরনের ব্যাপার এসব অঞ্চলে কখনো ঘটে নি। গঙ্গাচরণও সেখানে দাড়িয়ে । একটা বটতলায় বড় আটচালাওয়ালা দোকানটা । প্ৰথমে লোকে সবাই এলো চাল কিনতে, তারপর কিসে যে কি হলো গঙ্গাচরণ জানে না, হঠাৎ দেখা গেল দোকানের চারিপাশে একটা হৈচৈ গোলমাল। মেলা লোক দোকানে ঢুকচে আর বেরুচ্চে। ধামা ও থলে হাতে বহুলোক মাঠ ভেঙে বঁওড়ের ধারের পথে পড়ে ছুটচে। সন্ধ্যার' দেরি নেই বেশি, সুৰ্যদেব পাটে বসে-বসে। গাছের মগডালে রাঙা রোদ । একজন কে বললে-উঃ, দোকানটা কি করেই লুণ্ঠ হচ্চে। গঙ্গাচরণও গিয়েছিল চাল কিনতে । হাতে তার চটের থলে। কিন্তু দোকানে দোকানে ঘুরে সে দেখলে চালের বাজার সাড়ে বারো টাকা। গত হাটবারেও ছিল দশ টাকা চার আনা, একটা হাটের মধ্যে মণে একেবারে ন’সিকে চড়ে যাবে। এ তো স্বপ্নের অগোচর । চাল কিনবে কি না-কিনবে ভাবচে, এমন সময় এই বিষম হৈচৈ । লোকের ভিড় ক্রমশঃ পাতলা হয়ে আসচে, সবাই উধ্বশ্বাসে ছুটচে। কেউ চাল নিয়ে ছুটচে, কেউ শুধু হাতে। গঙ্গাচরণ বিমূঢ়ের মত দাড়িয়ে ভাবচে তখনও, চাল কিনবে কিনা-এমন সময় পেছন থেকে দু’জন লোক এসে ওর