পাতা:বিভূতি বীথিকা - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৭১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কামার-বেী বললোঁ-তা নাও, তুমি আবার যে এক কাণ্ড বাধালে! গডে কপাল ছোচে না যায় দেখো ! শ্রাবণ মাসের মাঝামাঝি অবস্থা দেখে অনঙ্গ-বেী যে এত আশাবাদী, সে পৰ্যন্ত ভয় খেয়ে গেল। ধান চাল হঠাৎ যেন কপূরের মত দেশ থেকে উবে গেল কোথায়! এক দানা চাল কোথাও পাওয়া যায় না। অত বড় গোবিন্দপুরের হাটে চাল আসে না। আজকাল । খালি ধামা কাঠ হাতে দলে দলে লোক ফিরে ফিরে যাচ্চে চােল অভাবে । হাহাকার পড়ে গিয়েচে হাটে হাটে । কুণ্ডুদের দোকানে যে এত চাল ছিল, বস্তা সাজানো থাকতো বালির বস্তার মতো, সে গুদাম আজকাল শূন্যগভর্ণ। পথেঘাটে ক্রমশঃ ভিখিরীর ভিড বেড়ে যাচ্চে দিন দিন, এরা এতদিন ছিল কোথায় সকলেই ভাবে, অথচ কেউ জানে না। এ দেশের লোকও নয় এরা, বিদেশী ভিখিরী । একদিন অনঙ্গ-বেী রান্নাঘরে রান্না করচে, হঠাৎ পাঁচ-ছ’টি অর্ধ উলঙ্গ জীৰ্ণ শীর্ণ স্ত্রীলোক, সঙ্গে তাদের সম্পূর্ণ উলঙ্গ বালক-বালিকা-ঘরের দাওয়ার ধারে দাড়িয়ে বলতে লাগলো-ফ্যান খাইতাম-ফ্যান খাইতাম অনঙ্গ প্রথমটা ওদের উচ্চারণের বিকৃতিব দরুন কথাটা কি বলা হচ্চে বুঝতে পারলে না। তা ছাড়া খাইতাম’ এটা যে ক্রিয়াপদের অতীতকালের রূপ এসব দেশে, তা বর্তমানে প্রয়োগ করার সার্থকতা কি, এটা বুঝতেও একটু দেরি হলো । পরে বুঝলে যখন তখন বললে-একটু দাড়াও-ফ্যান দেবো। ওৱা হাড়ি, তোবড়ানো টিনের কৌটো পেতে ফ্যান নিয়ে যখন চলে গেল, তখন অনঙ্গ-বেী কতক্ষণ ওদের দিকে অবাক হয়ে চেয়ে রইল। এমন অবস্থা দাড়িয়েচে নাকি যে দেশ ছেড়ে এদের বিদেশে আসতে হয়েচে ছেলেমেয়ের হােত ধৱে এক মগ ফ্যান ভিক্ষে করতে ? অনঙ্গ-বৌয়ের চোখে জল এল। নিজের ছেলেরা পাঠশালায় গিয়েচে, ওদের কথা মনে পড়লো। এতগুলো লোককে ভাত দেওয়ার উপযুক্ত চাল নেই ঘরে, নইলে দিত না হয়। ওদের দু’টো छू।ि डाऊ । ক্ৰমে নানাস্থান থেকে ভীতিজনক সংবাদ আসতে লাগলো সব। অমুক গ্রামে চাল একদম পাওয়া যাচ্চে না, লোকে না খেয়ে আছে। অমুক গ্রামের &lp