পাতা:বিভূতি বীথিকা - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৯২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

খুঁজে খুঁজে সেই গোয়ালা-বাড়ী বারও হলো। ব্ৰাহ্মণ দেখে গৃহস্বামী ওকে, যত্ন করে বসালে, তামাক সেজে নিয়ে এল । গঙ্গাচরণ বললে-জায়গাটা তোমাদের বেশ । আসল কথা কিছু বলতে সাহস করচে না, বুক টিপ টিপ করচে। কি বলে বসে কি জানি ! চাল না পেলে উপোস শুরু হবে সবসুদ্ধ । গৃহস্বামী বললে-আজ্ঞে হঁ্যা। তবে ম্যালেরিয়া খুব। -সে সর্বত্র । নদীর ধারে । --তা আছে বটে, তবু ম্যালেরিয়াও আছে। - এদিকে যাচ্ছিলেন কোথায় ? --তোমার এখানেই আসা । —আমার এখানেই ? সে আমার ভাগ্যি। ব্ৰাহ্মণের পায়ের ধুলো পড়লো। তা কি মনে করে ? -ভয়ে বলবো না নিৰ্ভয়ে বলবো ? -সে কি কথা বাবাঠাকুর । আমাদের কাছে ও কথা বলতে নেই। বলুন কি জন্যে আসা ? --তোমার বাড়ী চাল আছে সন্ধান পেয়ে এসেচি। দিতেই হবে কিছু। না খেয়ে মরিচি একেবারে } -আমাদের গ্রামেই শুনেচি । -বাবাঠাকুর, চাল আমার আছে, মিথ্যে কথা বলবো না। আপনি দেবতা । কিন্তু সে চাল বিক্রি করবার নয় । -তিন মণ । নুকিয়ে রেখেছিলাম, যেদিন গবর্নমেণ্টের লোক আসে কাব্য ঘরে কত চাল আছে দেখতে, সেদিন মাটির মধ্যে পুতে রেখেছিলাম বলে চালগুলো একটু গুমে গন্ধ হয়ে গিয়েচে। ধান নেই, শুধু ওই চালি ক’টা সম্বল । ও বিক্রি করে ? আমরা কাচ্চা-বাচ্চা নিয়ে ঘর করি, রাগ করবেন। না, অভিসম্পাত দেবেন না বাবাঠাকুর। দিতে পারলি দিতাম। ওই ক’টা চাল ছাড়া আমার আর কোনো সম্বল নেই। ব্ৰাহ্মণের পায়ে হাত দিয়ে বলচি । bፖ ፃ