পাতা:বিভূতি বীথিকা - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৯৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মতি হেসে বললে-মাছ দ্যাও, মুগির ড্রাল দ্যাও, বড়ি-চচ্চড়ি স্থাও --দেবো, তুই খা খা-হঁ্যারে ভাত পাস নি ক'দিন রে ? মতি চোখ নিচু করে কলার পাতার দিকে চেয়ে বললে-পনেরো ষোল দিন আজ সুন্ধু, কচু সেদ্ধ আর পুইশাক সেদ্ধ খেয়ে আছি। আব্ব পাবি নে বামুনদিদি । তাই জোটাতে পাচ্ছিনে। ভাবলাম আর তো মবেই যাবো, মরবার আগে বামুন-দিদিব বাড়ীতে দুটো ভাত খেয়ে আসি। অনঙ্গ-বেী চোখের জল মুছে দৃপ্ত কণ্ঠে বললে-মতি, তুই থাক আজ। ভাত তোকে আমি কাল খাওয়াবেই । যেমন কবে পারি। মতি মুচিনীকে দু’দিন অন্তর যাহোক দু’টি ভাত দেয় অনঙ্গ-বেী । কোথা থেকে যে ভাত যোগান্ড হয়, তা তাকে কেউ জিজ্ঞেস করে না । ভট্টচায বুডো বাড়ী গিয়েচে কামদেবপুরে, কিন্তু গঙ্গাচবণেব দৃঢ়বিশ্বাস, ও ঠিক আবার এসে জুটবে । এ বাজারে এমন নিভাবনায় আহার জুটবে কোথা থেকে ? সেদিন মতি দুপুরে এসে হাজিব। ওব পরনে শতচ্ছিন্ন কাপড, মাথায় তেল নেই। অনঙ্গ-বেী ওকে বললে-মতি তেল দিচ্চি, একটা ডুব দিয়ে আষ দিকি । --পেট জলচে বামুন-দিদি। কাল ভাত জোটে নি, নেয়ে এলেই পেটে আগুন জ্বলে উঠবে। —তুই যা, সে ভাবনা তোকে ভাবতে হবে না। মতি মুচিনী নির্বোধি মেয়ে নয়, সে চুপ করে থেকে বললে-না, তোমাদেব এখানে আর খাবো না । -কেন রে ? --তুমি পাবে কোথায় বামুন-দিদি যে রোজ রোজ দেবে? -সে ভাবনা তোর নয়, আমার । তুই যা দিকি, নেয়ে আয় মতি মুচিনী সুন্নান সেরে এল। একটা কলার পাতে আধাপোয়াটাক কলাই সিদ্ধ ও কিসের চচ্চডি । অনঙ্গ-বেী ধরা গলায় বললে- ওই খ্যা মতি। মতি অবাক হয়ে এক দৃষ্টি ওর দিকে চেয়ে বললে—তোমাদেরও এই শুরু হোয়েচে ? -V5 C&C3C5 -চাল পেলে না ? -পঞ্চায় টাকা মণ। দাম দিলে এখুনি মেলে হয়তো । а о