পাতা:বিভূতি রচনাবলী (অষ্টম খণ্ড).djvu/৪২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ছায়াছবি SY —কি কথা রে ? —বললে ভয় পাবেন না তো ? আপনি আবার যে ভীতু । —কি বল না ? —জারামভাঙার বুনো সব ব্যাটা ডাকাত। ঠ্যাঙাড়ে, খুনী। আরামডাঙার ওধারে যে সনেকপুরের পাচকুড়োর বিল, ওই বিলে যে কত মানুষের মুণ্ডু আর দেহ পোতা–তার লেখা জোখা নেই! —তাতে কি ? আমাদের কাছে কি আছে যে নেবে ? আমি ভীতু, না তুই ভীতু ? কর্মফল আর প্রাক্তন, এ দুটো ছাড়িয়ে কোন মানুষটা কবে উঠেচে বলতে পারিস ? -छ्रे ! —এ সব কথা তোকে বলা আর বেনাবনে মুক্তে ছড়ানো । ভট্টাচাৰ্য মশাইকে বটতলায় বসাইয়া শিবু ঘোষ চাউল আনিতে গেল এবং কিছুক্ষণ পরে তিন জন জোয়ান লোককে সঙ্গে করিয়া ফিরিল। তাহাদের মধ্যে একজন তাহাকে সাষ্টাঙ্গে প্রণাম করিল—ঠাকুর মশাই, স্থ-কাঠা চাল এনেলাম অগ্নি স্থ-কাঠা সোনামুগির ভাল। আপনি রাখুন। আমরা পেসাদ পাবো। ঘি, তেল, মশলা, মাছ, আলু, পটল, বেগুন সব আসচে। আমাদের গা থেকে সিধে দিচ্চি আপনাকে । রাধারমণ ভট্টাচাৰ্য্য চমকাইয়া উঠিলেন। সর্বনাশ! বলে কি ? তিনি শূদ্রযাজী ব্রাহ্মণ নহেন, জীবনে কখনো শূত্রের দান গ্রহণ করেন নি—তাহা হইলে রানী রাসমণির বাড়ী হইতে সেবার দান লইয়া তিনি বড় মায়ুৰ হইতে পারিতেন। শিবু ঘোষ সব জানে, জানিয়া শুনিয়া ইহাদিগকে জুটাইয়া আনিবার হেতু কি ? শিবুর দিকে চাহিয়া দেখিলেন, শিৰু উহাদের পিছনে দাডাইয়া রহিয়াছে—তাহার মুখে এক অদ্ভুত ভাব, চোখে ঘুেন ভয়ের দৃষ্টি । *} রাধারমণ ভট্টাচার্ষ্য বলিলেন—বাপু সকল, আমি তোমাদের সিধে নিতে পারবো না। প্রসাদ পেতে চাও, আমি যা রাখবো, তাই খেয়ো এখন । এই চাল থেকে সের খানেক পয়সা নিয়ে আমার দিয়ে যাও— ওদের পিছন দিকে দাড়াইয়া শিবু চোখ টিপিতেছে কেন ? ভট্টাচাৰ্য মশাই কিছুই বুঝিতে পারিলেন না । . মাগের জোয়ান লোকটি এবার বুক ফুলাইয়া এক পা সামনে আসিয়া বলিল-ওসব হবে না ঠাকুর । তোমাকে রাখতে হবে, আমাদের সিধে নিতে হবে। আমার নাম শোনা আছে কি ? আমার নাম ভৈরব সর্দার . সর্বনাশ । ভট্টাচাৰ্য্য মহাশয় শিহরিয়া উঠিলেন। ভৈরব ডাকাতের নাম এ অঞ্চলে কে ন৷ জানে ? সেদিনও হলুদপুকুরের মজুমদারদের বাড়ী চিঠি দিয়া ডাকাণ্ডি করিতে গিয়া গ্রামের