পাতা:বিভূতি রচনাবলী (একাদশ খণ্ড).djvu/১৬৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

388 বিভূতি-রচনাবলী গদাধরের পৈতৃক-আমলের ছোট একখানি তালুক ছিল। সেখানে ইহাঙ্গের একটি কাছারিদ্ধর ও বহুকালের পুরানো গোমস্ত। বিদ্যমান। বেশ শীত পড়িয়াছে—একদিন গদাধর স্ত্রীকে একখানা চিঠি দেখাইয়া বলিলেন—ওগো, আজ সকাল-সকাল রান্না করে ফেল তো—আমপাড়া-ঢবঢবির গোমস্ত পত্র লিখেচে । কিছু আদায়-তশিল দেখে আসি । o অনঙ্গ পছন্দ করে না, স্বামী কোথাও গিয়ে বেশিদিন থাকে। কথা শুনিয়া তাহার মূখ শুকাইয়া গেল। স্বামীর মুখের দিকে চাহিয়া বলিল—কতদিন থাকবে ? --ত ধরে যে ক'দিন লাগে। দিন-ছ'সাত হবে বোধ হচ্চে । —এত দিন তো কোনোকালে থাকো না । আমপাড়া-ঢবঢবি গুনেচি অতি অজ-পাড়াগ । খাবে-দ্বাবে কি ? থাকবে কোথায় ? গদাধর হাসিয়া বলিলেন—সে ভাবনা তোমার চেয়ে আমার কম নয়, কারণ আমি সেখানে থাকবো। আমাদের সেখানে কাছাড়িবাড়ী আছে, ভাবনা কি ? গান্ধুলিমশাই বহুকালের গোমস্ত। সব ঠিক ক’রে রাখবেন । অনঙ্গ চিস্তিত মুখে বলিল—এই সেদিন অমন সন্দি-কাশি গেল, এখনো তেমন সেরে ওঠে নি। ভারি তোমাদের কাছারিদ্বর | টনের বেড়া, খড়ের ছাউনি। গল্গল করে হিম আসে। কি ক’রে কাটাবে, তাই ভাবচি। এখন না গেলেই নয় ? —কি ক’রে না গিয়ে পারা যায় ? পৌষ-কিস্তির সময় এসে পড়লো, যেতেই হবে। —আজই কেন ? কাল যেও । —যখন যেতেই হবে, তখন আজ আর কাল ক’রে কি লাভ ? বরং যত তাড়াতাড়ি o যাওয়া যায় • • • —আমায় নিয়ে চলো । গদাধর বিস্ময়ের স্বরে বলিলেন—তোমাকে ! ঢবঢবির কাছারি-বাড়িতে ? সে জায়গা কেমন তুমি জানো না, তাই বলচে । পুরুষমানুষে থাকতে পারে—মেয়েমানুষ থাকবে কোথায় ? একখানা মোটে ঘর। সে হয় কি ক’রে। —অতদিন লাগিও না, দু'তিন দিনের মধ্যে এসো তবে । —কাজ শেষ হ’লে আমি কি সেখানে বসে থাকবো ? চলে আসবো । গদাধর বেলা দুইটার পরে গরুরগাড়ী যোগে আমপাড় রওনা হইলেন। ছ'সাত ক্রোশ পথ—মাঠ ও বিলের ধার দিয়। রাস্তা—ঠাগু হাওয়ায় সন্ধ্যার দিকে বেশ শীত করিতে লাগিল। গদাধর গাড়োয়ানকে বলিলেন—সামনে তো কাপাসডাঙ্গা, তারপর নদী পেরুবি কি क'cग्न ? छज क७ ? —জল নেই। হেঁটে পার হওয়া যায়। নদীর ধারে ছোট দোকান। অনঙ্গ পাঁচ ছ'দিনের মত চাল, ভাল, মশলা, তেল, ৰি কিছুই দিতে বাকী রাখে নাই—তবুও গদাধর গাড়োয়ানকে বলিলেন—দেখতো, সোনা