পাতা:বিভূতি রচনাবলী (একাদশ খণ্ড).djvu/১৯২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

$१९ বিভূতি-রচনাবলী গ্রামের একটি বোষ্টমের মেয়েকে মাঝে-মাঝে ঘর-বাড়ী দেখিতে ও বীট দিয়া পরিষ্কার রাখিতে বলিয়াছিলেন—প্রতি মাসে ছুটি করিয়া টাকা এজন্য সে পাইবে, এ ব্যবস্থা ছিল—অথচ দেখা যাইতেছে সে কিছুই করে নাই। ভড়মহাশয় বলিলেন-সে বিন্দি বোর্টুমি তো একবারও ইজিকে আসেনি বলে মনে হচ্চে বাবু, তাকে একবার ডেকে পাঠাই। এই ও-মাসেও তার টাকা মণিঅর্ডার ক’রে পাঠানে৷ হয়েছে ! ধৰ্ম্ম আর নেই দেখচি কলিকালে । পয়সা নিবি অথচ কাজ করবি নে ! সন্ধান লইয়া জানা গেল, বিন্দি বোষ্টমি আজ কয়দিন হইল ভিন্‌-গায়ে তাহার মেয়ের বাড়ী গিয়াচে। পাশের বাড়ীর সিধু ভট্টাচাৰ্য্যর মেয়ে হৈম আসিয়া বলিল—মী ব’লে পাঠালেন, আপনি কি এখন চা খাবেন কাকা । —এই যে, হৈম মা, ভালো আছে ? তোমাদের বাড়ীর সব ভালো ? বাবা কোথায় ? —হ্যা, সব একরকম ভালো । বাবা বাড়ী নেই। কাকীমাকে আনলেন না কেন ? —এ তো মা, আড়তের কাজে একদিনের জন্যে আস।। আজই এখুনি চলে যাবো । —তা হবে না। মা বলেচে, আপনি আর ভড়-জ্যাঠা এবেলা আমাদের বাড়ী না খেয়ে যেতে পাবেন না। মা ভাত চড়িয়েচে । আমায় ব'লে দিলে—তোর কাকা চা খাবে কিনা জিগ্যেস ক'রে আয় । —তা যাও মা, নিয়ে এসোগে । বৈকালে তিনটার ট্রেনে কলিকাতা যাওয়ার কথা—দুপুরে সিধু ভট্টাচার্য্যের বাড়ী দু’জনে খাইতে গেলেন। হৈমর মা হাসিমুখে বলিল—কি ঠাকুরপো, এখন শহরে হয়ে পড়ে আমাদের ভুলে গেল নাকি ? বাড়ীটা যে জঙ্গল হয়ে গেল—ওর একটা ব্যবস্থা করে ! অনঙ্গকে নিয়ে এলে না কেন ? —আনবো কি বৌদি, একবেলার জন্ত আসা ! তাও এখানে আসবো ব'লে আসিনি, ঝিকরগাছায় এসেছিলাম আড়তের কাজে । সে আসতে চেয়েছিল । –এবার একদিন নিয়ে এসে ঠাকুরপো । কতদিন দেখিনি, দেখতে ইচ্ছে করে। —তার চেয়ে আপনি কেন চলুন না বৌদিদি, শহর ঘুরে আসবেন, দেখা-শোনাও হবে ? g —আমাদের সে ভাগ্যি যদি হবে, তবে হাড়ি ঠেলবে কে দু’বেলা ? ওকথা বাদ স্তাও তুমি—যেমন অদেষ্ট করে এসেছিলাম, তেমনি তো হবে। তবে একবার কালীঘাটে গিয়ে মা'কে দর্শন করার ইচ্ছে আছে। বোশেখ মাসের দিকে, দেখি কতদূর কি হয় ! —আমায় বলবেন, আমি নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করবো, আমার ওখানে গিয়ে পায়ের খুলে দেবেন। বৈকালের ট্রেনে ছুজনে কলিকাতায় ফিরিলেম। স্বামীকে দেখিয়া অনঙ্গ বড় খুলী হইল। কাছে বসিয়া চা ও খাবার খাওয়াইতে-খাওয়াইতে বলিল—উঃ, ভূমি জালে মা—কি