পাতা:বিভূতি রচনাবলী (একাদশ খণ্ড).djvu/২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিভূতি-রচনাবলী ون —গুনে দেখি নি। হাজার চারেক হবে। তুমি কিছু দিও—কিনতে হয় ভাল দেখে একখানা= —ওতেই ভেসে যাবে।-- আমি সামান্য একটু ঘুমিয়ে নিই। যখন উঠলাম তখন শীতের বেলা একেবারেই গিয়েছে। স্বরবালা চা নিয়ে এল " বললাম —বাইরে সনাতনদ বসে আছে নিশ্চয়। ওকে চ পাঠিয়ে দাও— স্বরবালা বললে—মালিয়াড়া থেকে তোমার কল এসেছে, দু'জন লোক বসে আছে । বৃন্দাবন কম্পাউণ্ডার এসেছিল বলতে, আমি বললাম, বাবু ঘুমুচ্ছেন। —এখন আমার ইচ্ছে নেই যাবার। —সে তুমি বোঝে গিয়ে। কিছু খাবে ? —নাঃ, এই অবেলার শেষে খিদে নেই এখন। জামাটা দাও, নিচে নামি । বাইরের ঘরে সনাতনদা ঠিক বসে আছে। আমায় বললে—কি হে, ঘুমূলে যে খুব ? এরা এসেছে মালিয়tড়া থেকে তোমায় নিতে । লোক দুটি উঠে দাড়িয়ে নমস্কার করলে। একজন বললে—এখুনি চলুন ডাক্তারবাবু, বীরেশ্বর কুণ্ডুর ছোট ছেলের জর আজ ন'দিন। ছাড়ছে না কিছুতেই— —কে দেখছে ? —গ্রামেরই শিবু ডাক্তার— —বস্কন । পঞ্চাশ টাকা নেবো এই অবেলায় যাওয়ার দরুন— —বাবু, আপনার দয়ার শরীর। অত টাকা দেওয়ার সাধ্যি থাকলে শিৰু ডাক্তারকে দেখাতে যাবে কেন বলুন । —কত দিতে পারবেন ? দশ টাকা কম দেবেন— সনাতনদা এই সময় বলে উঠলো—দরদপ্তর করাটা কার সঙ্গে ? উনি হাত বুলিয়ে দিলে রুগীর অম্বখ সেরে যায়—কোনো কথা বোলো না । সনাতনের ওপর আমি মনে মনে বিরক্ত হলাম। আমি তাকে দালালি করতে ডেকেছি নাকি । ও রকম ব্যবসাদারি কথা বলা আমি মোটেই পছন্দ করিনে। সনাতনের প্রতি বিরক্তি প্রকাশের জন্তেই বললাম—দরদপ্তর আমি পছন্দ করিনে বটে, তবে গরীব লোকের কথা স্বতন্ত্র । যাগ গে, আর দশ টাকা কম দেবেন। কিসে যাবে ? নেীকো এনেছেন? বেশ । সনাতন আমার সঙ্গে নৌকোতে উঠলো। রাঙা রোদ নদীতীরের গাছপালার মাথায় ; সাদা বকের দল শেওলার দামে, ডাঙার সবুজ ৰাসে চরে বেড়াচ্ছে, শীত আজ ভালই পড়েছে। উপীন জেলে নদীর ধারে দোয়াড়িতে মাছ ধরছে, আমায় দেখে বললে–বাৰু, একটা বড় বাটা মাছ প্যালোম এই মাত্তর-আপনার বাড়ী পেটিয়ে দেবো ?