পাতা:বিভূতি রচনাবলী (একাদশ খণ্ড).djvu/৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

अटैर्थ छल €œY হল আমার সমস্ত সভা যেন ও আকর্ষণ করে নিয়ে চলে গেল । মেয়েমানুষের আকর্ষণে এমন হয় তা কোনো দিন আমার ধারণ নেই। স্বরবালাও তো মেয়েমানুষ, কিন্তু তার আসজলিঙ্গা আমাকে এমন কুহকজালে ফেলে নি কোনো দিন। মনের মধ্যে পান্নার চিন্তা ছাড়া আর কোনো চিন্তা স্থান পায় তার সাধ্য কি। জীবনের এ এক অদ্ভুত ধরনের নতুন অভিজ্ঞতা। আজ মনে পড়লো, রামপ্রসাদ ও শাস্তির কথা । বেচারী রামপ্রসাদের বোধ হয় এমনি অবস্থা হয়েছিল, তখন আমার অমন অবস্থা হয় নি, আমি ওর মনের খবর কেমন করে জানবো ? পান্নার কি আছে তাও জানি না। এমন কিছু অপূৰ্ব্ব ধরনের রূপসী সে নয়। অমম মেয়ে আর কখনও দেখি নি, এ কথাও অবিশ্বাস্ত। স্বরবালা যখন নববধূরূপে এসেছিল আমাদের বাড়ী, তখন ওর চেয়ে অনেক রূপসী ছিল, এখন অবিহি তার বয়েস অনেক বেশি হয়ে গিয়েছে ; এখন আর তেমন রূপ নেই। কিন্তু ওসব কিছু নয় আমি জানি। পাল্লার রূপ ওর প্রত্যেক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে, ওর মুখের শ্ৰীতে, ওর চোখের চাউনিতে, ওর মাথার চুলের ঢেউখেলানে নিবিড়তায়, ওর চটুল হাসিতে, ওর হাত-পায়ের লাস্তভঙ্গিতে। মুখে বলা যায় না সে কি। অথচ তা পুরুষকে কি ভীষণভাবে আকর্ষণ করে—আর আমার মত পুরুষকে, যে কখনও ছাত্রবয়সেও মেয়েদের ত্রিসীমানা মাড়ায় নি। মেডিকেল কলেজে পড়বার সময় মিস রোজার্স বলে একজন এ্যাংলো ইণ্ডিয়ান নার্সকে নিয়ে ছেলেদের মধ্যে কত দ্বন্দ্ব, কত নাচানাচি, কত রেষারেষি চলতো । কে তাকে নিয়ে সিনেমাতে বেরুতে পারে, কে তাকে একদিন হোটেলে খাওয়াতে পারে—এই নিয়ে কত প্রতিযোগিতা চলতো—আমি ঘৃণার সঙ্গে দূর থেকে সে স্বন্দর-উপসুন্দর যুদ্ধ দেখেচি। কিন্তু আমার মনের অবস্থা যে কখনও এমন হতে পারে, তা স্বপ্নেও ভাবি নি । এখন বুঝেচি, মেয়েদের মধ্যে শ্রেণীভেদ আছে, সব মেয়ে সব পুরুষকে আকর্ষণ করতে পারে না। কে কাকে যে টানবে, সে কথা আগে থেকে কেউ বলতে পারে না। আচ্ছা, শাস্তিও তো চটুল মেয়ে আমাদের গ্রামের, শুনতে পাই অনেক পুরুষকে সে নাচিয়েচে, কিন্তু একদিনও তাকে বোন ছাড়া অন্য চোখে দেখি নি। মাঝি উঠে এসে বললে—বাবু, বাড়ী যাবেন নাকি ? —না, আজ আর যাবো না । —বাড়ীতে ভাববেন । —তুই যা না কেন, আমি একখানা চিঠি দিচ্চি। —তার চেয়ে বাবু, আমি বলি, আপনি চলুন না কেন। আমি আবার আপনাকে দুপুরের পর পৌছে দেবো। —আচ্ছা, আমি ভেবে দেখি, তুই বাইরে বোস। ফরসা হয়ে গেল রাত। সঙ্গে সঙ্গে রাতের মোহ যেন খানিকটা কেটে গেল। মনে