পাতা:বিভূতি রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড).djvu/১৯৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কিন্নর দল Ꮌb←Ꮌ ঘণ্টা দুয়েক পর পিসিমার বারুদ ফুরিয়ে যেতে ডাক্তারের বৌ এসে বললে, “বেীমা, বাটি আমার দাও মা, আমি করে দিচ্ছি। ছিঃ ছিঃ, মানুষকে মানুষ অমন করে বলে ?” বিশ বছরের রোগশীর্ণ বধুটি আজ সারা হৃদয় মথিত করে কেঁদে ফেলল বিপুল বেদনায়। শ্বশুর-শাশুড়ীকে অকালে হারিয়ে সে আর বিধবা ননদের গঞ্জনা সহ করতে পারচে না । ডাক্তারের বোঁ আঁচল দিয়ে তার চোখের জল মুছিয়ে দিয়ে বললে, “কেঁদ নাম, বাটিটা আমায় দাও।” —“না, থাকৃ মা ! বাটি আমি আর জীবনে খাব না।" —“ছি, সে কি হয় মা ?” —“খুব হয় ।” 琴 ডাক্তারের বৌয়ের বহু অনুনয়বিনয় সত্ত্বেও বৌমা বাটি বার করে দিলে না। ডাক্তারের বে বেলা একটা পৰ্য্যন্ত বাটির খোজে সমস্ত কিছু তন্ন তন্ন করে দেখলে, কিন্তু কোথাও সে বাটি পাওয়া গেল না, আর পাওয়া গেল না সে কোটা তরকারীগুলো । সেদিন রাতে ডাক্তার গিয়েছে রিহার্সাল দিতে। এবার পূজায় নাকি ভারী ধুম করে থিয়েটার হবে। ডাক্তারের বেী মুখের মধ্যে অনেকগুলো এলাচ পুরে ছারপোকা মারতে বিছানা পাতিপাতি করে খোজে—এ তার নিত্যকার অভ্যাস। রাতে সে বড় একটা ঘুমোর না। এমন সময় পাশের ঘরে বেীমা উত্তাক্ত হয়ে বললে, “ভাল জাল, দরজাটা যে কিছুতেই খুলছে না ম৷ ” ডাক্তারের বে। আলো নিয়ে এগিয়ে এল, “কি হয়েছে বৌমা ?” —“দেখ নাম, দরজার খিল কিছুতেই পাচ্ছি না ।” —“দরজা তো খোলা বৌমা ?” —“তবে থিল কোথায় গেল ?” ডাক্তারের বেী জানে যে, তার জ্যাঠাইম মৃত্যুর পূৰ্ব্বে ঐ রকম দিকভ্রান্ত হয়ে গেছিল। বোমার এই রহস্যজনক আচরণে সে রীতিমতো ভয় পেয়ে গেল। . আস্তে আস্তে নিজে এসে দরজাটা খুলে দিলে । সামান্য পরে বৌমা বাইরে থেকে ফিরে এসে আবার নিজের বিছানায় শোয় এবং ডাক্তারের বে মশা তাড়িয়ে পুনরায় মশারিট গদির তলায় গুজে দেয়। তারপর কখন ঘুমিয়ে পড়ে জানে না । ডাক্তারের ডাকে ধড়মড় করে উঠে দরজা খুলে দিল । ডাক্তার বললে, “যেন মোষ একেবারে। ঘুমে অচেতন ।" —“থাক, খুব হয়েছে!” —“আধঘণ্টা ধরে একজন ভদ্রলোক ডাকছে।” —“সকালে অতগুলো কথা তোশক কাচলে ও ভদ্রলোকেরও এই দশা হোত নিশ্চয়।" ডাক্তার শুয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। কতক্ষণ যে ঘুমঘোরে কেটেছিল দুজনের তা হয়তো তারা জানে না । ডাক্তারের বেী সহসা সচেতন হ’ল স্বামীর আহানে, “ওগে, ওগো, দেখ তো ও ঘরে বৌমা কি যেন বলছেন ।” ডাক্তারের বোঁ শুনলে বৌমা পাশের ঘরে বলছে, “দুর ছাই! কিছুতেই তো আলো জলছে না ।" - রুগ্নকণ্ঠে ক্ষীণস্বরে নিশীথের নিস্তন্ধত ভঙ্গ করে অট্টহাসি হেসে ওঠে যেন কিসের ব্যাকুল প্রচেষ্টায়। ডাক্তারের বোঁ গৃহে প্রবেশ করে দেখে সে এক অদ্ভুত ব্যাপার। বৌমা মশারির