পাতা:বিভূতি রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড).djvu/২৩৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

किन्नन्न मठ . २२s কি কখনো হয় ! কি জাত মেয়েটার ? হি দু তো ? অর্থাৎ, তাহলে রগড়টা আরও জমে। রায়-বোঁ বলেন,—হি দুই, মেয়েটা বদি বামুন। এদেশে বৈদ্যকে বলে থাকে ‘বদি বামুন-এ অঞ্চলের ত্রিসীমানায় বৈছের বাস না থাকায় বৈদ্যজাতির সমাজতত্ত্ব সম্বন্ধে এদের ধারণা অত্যন্ত অস্পষ্ট। কারো বিশ্বাস ব্রাহ্মণের পরেই বৈস্তের সামাজিক স্থান, তারা একপ্রকারের নিম্নবর্ণের ব্রাহ্মণ, তার চেয়ে নীচু নয়—আবার কারো বিশ্বাস তাদের স্থান সমাজের নিম্নতর ধাপের দিকে । শাস্তি বল্লে—বোঁয়ের বয়েস কত ? —ও, তা অনেক । শুনচি চব্বিশ-পচিশ— সকলে সমস্বরে আবার একটা বিস্ময়ের রোল তুল্লে। চব্বিশ-পচিশ বছর পর্য্যস্ত মেয়ে আইবুড়ে থাকে ঘরে! এ আবার কোথাকার ছোট জাত, রামোঃ ! ছিঃ– শান্তির মা বল্লেন—তাহলে মেয়ে আর নয়, মাগী বল! পাড় শসা—বাপ-মা বুঝি ঘরে বীজ রেখেছিল ! কে একজন মুখ টিপে হেসে বল্লেন—বিধবা না তো ? চক্কত্তি-গিয়ী বল্লেন—আগের পক্ষের ছেলেমেয়ে কিছু আছে নাকি মাগীর । এ কথায় শাস্তিই আগে মুখে আঁচল দিয়ে খিলখিল করে হেসে উঠলো—তারপরে বাকি সকলে তার সঙ্গে যোগ দিলে। হ্যা, এটা একটা নতুন ও ভারী মজার খবর বটে, মেয়ে-গজালির কিছুদিনের মত খোরাক সংগ্রহ হ’ল। আমচুরি কাটালচুরির গল্প একটু একঘেয়ে হয়ে পড়েছিল। ঠিক পরের দিনই এক অপ্রত্যাশিত ব্যাপার ঘটলো। শ্ৰীপতির মেজ ভাই উমাপতি গারে এসে বাড়ির চাবি খুলে লোক লাগিয়ে ঘরদের পরিষ্কার করতে লাগলো। তার দাদা বৌদিদিকে নিয়ে শীগগির আসবে এবং কিছুদিন নাকি গায়েই বাস করবে। বৌদিদি পাড়াগ কখনো দেখেননি,—গ্রামে আসবার তার খুব আগ্রহ । তার দাদাও কলকাতায় বদলি হবার চেষ্টা করচে । মেয়ে-মজলিসে সবাই তো অবাক । শ্ৰীপতি কোন মুথে অজাতের বউ নিয়ে গায়ে এসে উঠবে! মানুষের একটা লজ্জ-সরমও তো থাকে, করেই ফেলেছিস্ না হয় একটা অকাজ ! এ সব কি থিরিস্টানি কাগুকারখানা, কালে কালে হ’ল কি ! আর সে ধিঙ্গি মাগীটারই বা কি ভরসা, ব্রাহ্মণদের মধ্যে ব্রাহ্মণ পাড়ায় বিয়ের বউ সেজে সে কোন সাহসে আসবে। শ্ৰীপতি অবিপ্তি বেী নিয়ে পৈতৃক বাড়িতে আসার বিষয়ে এদের মত জিজ্ঞাসা করেনি। একদিন একখানা নৌকা এসে গ্রামের ঘাটে দুপুরের সময় লাগলো এবং নৌকো থেকে নামল শ্ৰীপতি, তার নববিবাহিতা বধূ, একটি ছোকরা চাকর ও দুটি ট্রাঙ্ক ও একটা বড় বিছানার মোট, একটা ঝুড়ি বোঝাই টুকিটাকি জিনিস। ঘাটে দু-একজন যারা অত বেলায় স্বান করছিল, তারা তখুনি পাড়ার মধ্যে গিয়ে খবরটা সবাইকে বললে। তখন কিন্তু কেউ এল না, অত বেলায় এখন শ্ৰীপতিদের বাড়ি গেলে তাদের খেতে বলতে হয়। অসময়ে এখন এসে তারা রান্নাবান্না চড়িয়ে খাবে, সেটা প্রতিবেশী হয়ে হতে দেওয়া কৰ্ত্তব্য নয়, সুতরাং সে ঝঞ্চাট ঘাড়ে করবার চেয়ে এখন না যাওয়াই বুদ্ধির কাজ । কিন্তু রাসু চকত্তি আর প্রিয় মুখুয্যের বাড়ির মেয়েরা অত সহজে রেহাই পেলেন না। শ্ৰীপতি নিজে গিয়ে একেবারে অন্তঃপুরের মধ্যে ঢুকে বল্লে-ও পিসিম, ও বৌদিদি, আপনার