পাতা:বিভূতি রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড).djvu/৩৮২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

•óማልፅ बिडूडि-ब्रध्नावलैौ থাকবে, হয়তো খুকুও অতি বৃদ্ধ অবস্থার থাকতে পারে। তখনও ইছামতীতে এমনি ঘোলার ঢল নামবে, বনসিমতলার ঘাটে নতুন মেয়েছেলে কত ফুল নিতে আসবে, হাসবে, খেলবে, জল ছুড়বে—যেমন একদিন আমরাও করেছিলুম। খুকুদের হাসাতুম ভাল কি মনা 7 মন্দ হইলে তো গন্ধ হইত এই কথাটা পূর্ববঙ্গের স্বরে বলে। এবার গিয়ে মনে হল এমন বর্ষা-সজল দিনের গভীর আনন্দ কোন বছর এর আগে পাই নি। এ যেন একটা স্বপ্নের মত কেটে গেল—এত সুন্দর সকাল-সন্ধ্যা ! ফাত্তন মাসে যখন শালমঞ্জরী নিয়ে গিয়েছিলুম, বা যেবার গিয়ে দেখি উড়েরা তত্ত্ব বয়ে নিয়ে গিয়ে ভাত খাচ্ছে, সেসব দিনের ঘটনা তো এখন পুরোনো মনে হয়—Fresh, ever young ! দিনগুলির মধ্যে তাজা আনন্দ তো থাকা চাই-ই, আনন্দের নব নব স্বষ্টি স্রষ্টামনের প্রাণ-শক্তিরই পরিচয় দেয় । এই সব দিনের সঙ্গে দশ-বিশ বছর আগেকার পুরোনো, ছাতা-পড়া, ভঙ্গুর দিনগুলির যদি প্রতিযোগিতা হয়, তবে স্মৃতির ও আশার দরবারে সম্মান লাভ করতে পারে না । তা হেরে যেতে বাধ্য। সেইজন্তেই সেই সব অসহায়, নিরপরাধ, নিরুপায় দিনগুলির জন্তে মমতা আসে । নিজের ঘরে বারাকপুরে সেদিন শুয়েচি, শুক্রবার রাত্রে। শুনচি ন'দিদিদের ঘরে খুব গল্প ও হাসির শব্দ। বোধহয় খুকু কোন গল্প করচে ওদের কাছে। এই ঘরে শুয়ে শুয়ে ১৯২৪ সাল থেকে, আজ ১৯৩৮ সালের জুলাই মাস পর্য্যন্ত এই গল্প তো শুনে আসচি—এ একটা চমৎকার অভিজ্ঞতা। তাই কলকাতা থেকে হঠাৎ এসে একরাত্রে বারাকপুরের খড়ের ঘরে নির্জন রাত্রে শুয়ে সে অভিজ্ঞতাটি হঠাৎ হওয়াতে খানিকট এমন অবাস্তব বলে মনে হল যে অনেকক্ষণ ধরে নিজেকে পারিপার্থিক অবস্থার সঙ্গে খাপ খাইয়ে চৈতন্তটাকে এর মাটিতে ন এনে তবে সে অভিজ্ঞতাটুকু গ্রহণ করতে পারলুম। 蜘 তারপর আর একটা চমৎকার অভিজ্ঞতা। অনেক রাত্রে চৌকিদার হাকতে বেরিয়ে আমার ঘরের মধ্যে লণ্ঠন বাড়িয়ে দেখচে । আমি বল্লুম–কিরে, ভাল আছিস ? চৌকিদার বল্লে—ই বাৰু, আছি। কবে আলেন বাৰু ? তারপর, সে নিজের নিমোনিয়া হয়েছিল, সে গল্প বলতে শুরু করলে। আমার তখন সত্যই মনে হল আমি এই গ্রামেরই লোক—থাকি প্রবাসে কলকাতায় । আসলে আমার বাড়ি এখানেই । সে যে কি একটা অদ্ভূত অনুভূতি ! গ্রামের মাটির সঙ্গে এক মুহূর্তে সেই গভীর রাত্রে একটা ঘনিষ্ঠ যোগ স্থাপিত হয়ে গেল মুরেন চৌকিদারের একটা কথায়—বাবু বাড়ি আলেন কবে ? রবিবার (১৫ই শ্রাবণ) হাট করতে গিয়ে গোপালনগরের দোকানে দোকানে বেড়িয়েও ঠিক ওই রকম অনুভূতি হল। একজন লোকে তো বল্লে—আপনি কি সেই থেকেই বাড়ি :আছেন ? বর্ষা-সজল প্রাতে সোমবারে হেঁটে বনগা এসেও কি তৃপ্তি ! ওদের উঠোনে খুকু দাড়িয়ে রইল। যখন আসি দরজার কাছেও দাড়াল একবার। বনগাঁয়ে খয়রামারির মাঠে যেখানে সেই মটরলতার ঝোপ, সেখানে-এ বছর প্রথম বেড়াতে গেলুম এদিন। ছোট এড়াঞ্চির জঙ্গল বড় বেশী বেড়েচে । সত্যিই অপূৰ্ব্ব আনন্দ পেয়েছিলুম দেশে গিয়ে এই বর্ষণমুখর শ্রাবণ দিনে। শুক্রবার দিন ছিল ১৩ই শ্রাবণ, আমার ছেলেবেলার ওই দিনটি আমার কাছে ছিল একটা বড় উৎসবের দিন, মনসার ভাসান বসত ওই দিনটিতে, আর তিন চার দিন ধরে চলত জেলেপাড়ার পুরোনো