পাতা:বিভূতি রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২২০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

〉ふ8 বিভূতি-রচনাবলী এ যেন কেমন অদ্ভুত লাগছিল। আমাদের কুঠির মাঠে, আমাদের সইমার বাড়ির রোয়াকে ! সন্ধ্যা হলে তেঁতুলতলায় পথটা দিয়ে সবাই মিলে আবার ফিরলাম-ময়না-কাটার ডালগুলো ওখান থেকে আবার নিলাম উঠিয়ে—সইমার বাড়ি এসে প্লে'থ হরেন এসে বসে আছে। সুইমার সঙ্গে মুনীতিবাবুর খানিকক্ষণ কথাবার্তা হল—পরে আমর। বাব হয়ে গিবিশদর নড়ি এসে গেলাম—তখনই ওদের রান্নাঘরের পৈঠাতে জ্যোৎস্না উঠে গিয়েচে । তারপরে গাজিতলার পথ দিয়ে হেঁটে মোটর ধরলুম—গোপালনগরের হাট-ফেরত লোক বসে আছে মোটর দেখবার জন্তে। থানকতক স্যাণ্ডউইচ ও ডালমুট কিছু খেয়ে নেওয় গেল—কুজোর জল খেয়ে-টেয়ে গাড়ি স্টার্ট দেওয়া হল । বন্ধুর বাসায় এসে দেখি তরু বেচারীর চোঁদ পনের দিন জর—বিছানায় শুয়ে আছে, বন্ধু ফোঁড়ায় শয্যাগত—বষ্ণুর বেী এসেচে, কিন্তু সে বেচারীর দুর্দশার সীমা নেই। সেখানে কিছু চা ও খাবার খাওয়ার পরে আমরা সুনীর জ্যোৎস্না-ভরা রাত্রে মাঠের ভিতর দিয়ে রাস্তায় সজোরে গাড়ি চালিয়ে রাত্রি সাড়ে ন’টাতে কলকাতার বাসায় এসে পৌছলম । তখনও বাসায় খাওয়া আরম্ভ হয় নি—ঠাকুর তখনও বৃটি গড়চে । আমি এসে টেবিল পেতে লিখতে বসে গেলাম, আর ভাবছিলাম এই খানিক আগে যখন সন্ধ্যার অন্ধকার ঘন হল তখন ছিলুম আমাদের বাড়ির পিছনকার গাবতলার পথে—এরই মধ্যে কলকাতার বাসীয় ফিরে এত সকাল-রাত্রে বারান্দার আলো জেলে বসে লিখচি, এ কেমন হল ?... যদি মোটর না থাকতো তবে কখন পৌছতাম ?--সন্ধ্যার পরে বেরিয়ে সন্ধ্যার গাড়ি ধরে, বা বনগ্রাম থেকে ট্রেন ধরে, রাত্রি বারোটাতে কলকাতা পোছতাম ! আমি সত্যই আজ একটা আনন্দ পেলুম। একটা অদ্ভুত—ও সুন্দর ধরনের আনন্দ পেলুম। ওঁরা গিয়েছিলেন পথের পাচালী’র দেশ দেথতে—আমি আমার পরিচিত ও প্রিয় স্থানগুলিতে কলকাতার এই প্রিয় বন্ধুদের নিয়ে বেড়িয়ে আজ সত্যই একটা নতুন ধরনের আনন্দ পেলুম যা আর কখনো কোনো tri-এ পাই নি। ইচ্ছা আছে বৈশাখ মাসের দিকে একবার এদিকে এসে ওঁদের নিয়ে ইছামতীতে নৌকা ভ্রমণ ও কোনো একটা বনের ধারে বনভোজন করা হবে। সুনীতিবাবুও সে প্রস্তাব করলেন, সবাই তাতে রাজী। কাল দুপুরে সিদ্ধেশ্বরবাবুর ঠাকুরবাড়িতে ছিল নিমন্ত্রণ, সেখানে সকলের সঙ্গে গল্পগুজবে বেলা হল তিনটা, সেখান থেকে গেলুম গৈরিক পতাকা দেখতে মনোমোহনে । এ গেল কালকার কথা, কিন্তু আজ এমন অপূর্ব আনন্দ পেয়েচি বৈকালের দিকে যে, মনে হচ্চে জীবনে ক—ত দিন এ রকম অদ্ভূত ধরনের বিষাদের ও উত্তেজনার আনন্দ হয় নি আমার । কিসে থেকে তা এল ? অতি সামান্ত কারণ থেকে। ক্লাসে দেবব্রত নাকি ছোট একটা খড়ি নিয়ে পকেটে রেখেছে, ক্লাসের মনিটার তার হাত মুচড়ে সেটা নিয়েচে কেড়ে। দেবব্রত