পাতা:বিভূতি রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩৪৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিভূতুিরচনাবলী ילצ9\ কারকে যেন চাবুক উচিয়ে তাড়া করে আসছে। দেশের বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়ের খ্যাতনামা অধ্যক্ষদের সঙ্গে রাজচন্দ্রবাবুর পত্র-ব্যবহার হয় বা তাদের দু একজনের সঙ্গে পরিচয় যে খুব ঘনিষ্ঠ তাও রাজচন্দ্রবাবুর অনুপস্থিতির ফঁাকে প্রতুল খানকতক চিঠি দেখিয়ে আমাকে বুঝিয়ে দিলে। হোস্টেলে এসে গল্পের সময় তাদের মধ্যে হেনরী রবাটসন ও হারল্ড জেফ্রিস্— দু'টাে নাম শুনে একজন এম্-এ শ্রেণীর গণিতের ছাত্র বললে, বর্তমান কালে এরা নাকি গণিতের দুই দিকৃপাল। কলেজে নলিনাক্ষবাবু “On ইত্যাদি ইত্যাদি" নামক এক দুর্বোধ্য প্রবন্ধ পাঠ করলেন। প্রিন্সিপাল তখন ছিলেন সভাপতি। অন্যাস্থ্য অধ্যাপক ও উচ্চশ্রেণীর ছাত্রদের মধ্যে অনেকে উপস্থিত ছিলেন। গণিতের অধ্যাপকের প্রবন্ধের পাণ্ডুলিপিটা একবার দেখবার জন্তে, নলিনাক্ষবাবু বক্তৃতামঞ্চ থেকে নামলেই কাড়াকড়ি শুরু করলেন। কেবল রাজচন্ধুবাবুর কোনো উৎসাহ লক্ষ্য করা গেল না। তিনি নাকি, প্রতুল শুনে এল, বাড়িতে বলেছেন— নলিনাক্ষবাবু প্রবন্ধের অধিকাংশই ভিত্তিহীন। অত অসম্পূর্ণ data-র ওপর নলিনাক্ষবাবুর মত বিচক্ষণ লোক যে কি করে তার বক্তব্য খাড়া করেছেন তা ভেবে রাজচন্দ্রবাবু আশ্চর্য হয়ে গেছেন—ইত্যাদি। এর মান্স পাচেক পরে Philosophical Magazine-এ রাজচন্দ্রবাবুর একটা প্রবন্ধ বার হোল। তাতে শুনলাম, তিনি নলিনাক্ষবাবুর মতবাদকে খণ্ডন করেছেন, যদিও নলিনাক্ষবাবুর প্রবন্ধের উল্লেখ কোথাও তিনি করেন নি। প্রতুল কলেজের লাইব্রেরীতে দেখালে, wpN(Ffrég fests offsu wysstof 0'sullivan 5fm. Geometry of Hyper-Spaces সংক্রান্ত নূতন বইয়ে অধ্যাপক সেনের অনুসন্ধানের যথেষ্ট সাহায্য নিয়েছেন এবং গণিতের এই নূতন শাখায় অধ্যাপক সেন যে যথেষ্ট আলোকপাত করেছেন—মনীষী অধ্যাপক সে-কথা নিজ গ্রন্থের যথাস্থানে স্পষ্টভাবে স্বীকার করেছেন। একদিন রাজচন্দ্রবাবুর বাড়িতে আমাদের নিমন্ত্রণ হোল। প্রভাবতীর হাতের রন্ধনের প্রশংসা এর আগে প্রতুল দু'একদিন করেছিল বটে—খুব যে বাড়িয়ে বলেছিল তা মনে হোল মা। প্রভাবতী আমাদের সঙ্গে যত শাস্ত, অসঙ্কোচ ও সহজ ব্যবহার করতেন ততই আমাদের, বিশেষ করে আমার আনাড়ি ভাবটা যেন বেড়েই চলেছিল ; কোন রকমে নিমন্ত্রিতের কর্তব্য সমাপ্ত করার পর রাজচন্দ্রবাবুর আহানে তার ঘরে গেলাম। ঘরে টেবিল চেয়ার তত ছিল না। তিনি তাকিয়া ঠেস দিয়ে তক্তপোশের ওপর বসে আরাম করছিলেন । কথায় কথায় বললেন-ওহে, একটা জিনিস বার করে ফেলেছি। ঠিক তিন বৎসর পরে একটা ধূমকেতু আসছে—এটা জানাশোনা বা তোমাদের ক্যাটালগের বাইরের জিনিস—এটা হয় আসছে প্রথমবার নয়তো অনেকদিন পরে। ঠিক তিন বছর পরে আমাদের আকাশে দেখা যাবে। তারপর তিনি জানালেন, অন্ত একটা বিষয়ের অনুসন্ধান করতে এই ধূমকেতুর আসবার সন্ধান তিনি পেয়েছেন—তবে এটা ঠিক যে বৈজ্ঞানিকদের তালিকাভুক্ত ধূমকেতু তা নয়। একটা কিসের বন্ধে ছুটি হোল। হয়তো গ্রীষ্মের হবে, ঠিক মনে নেই। অনেকদিন পর