মরণের ডঙ্কা বাজে Σ Σ Σ ক্রমে ধীরে ধীরে ধুলো আর ধোয়ার আবরণ কেটে যেতেই এ্যালিস বল্লে—চলে এগিয়ে গিয়ে দেখি, মিঃ বোস্—. সামনে এক জায়গায় ফুটপাথের ওপর বেজায় লোক জড় হয়েছে। একটা বাড়ী পড়েছে ভেঙ্গে। অতি বীভৎস দৃশ্ব ফুটপাথের ওপর। অনেকগুলি ছোট ছোট ছেলেমেয়ের ছিন্ন-ভিন্ন দেহ ছিটকে ছড়িয়ে পড়ে আছে সেখানটায়। বাড়ীটা বোধহয় একটা চীনা স্কুল ছিল—বেল এগারোট, ছেলেমেয়ের স্কুলে যাচ্ছিল, কতক ছিল স্কুল বাড়ীর মধ্যে। বাড়ীখান একেবারে হুমড়ি খেয়ে ভেঙে পড়েছে। রক্তে ভেসে যাচ্ছে ফুটপাথ ও রাস্তার খানিকদূর পর্য্যস্ত। হর্ন বাজিয়ে দুখান রেড ক্রশ এ্যাম্বুলেন্স এল। একটা ছোট ছেলে এখনও নড়ছে— এ্যালিস্ ছুটে তার পাশে গিয়ে বসলো। বিমল এক চমক দেখেই বল্লে—কোনো আশা নেই মিস্ হুইটবার্ন—ও এখুনি যাবে। বিমলের গা তখনও কঁপিছে। জীবনে এ রকম দৃশ্ব কখনো দেখবার কল্পনাও সে করেনি। যুদ্ধ না শিশুপাল বধ ! এ্যালিস্ বিমলের কাজ অনেক সংক্ষেপ হয়ে গিয়েছিল। ধ্বংসস্তুপের মধ্যে আহত কেউ ছিল না—সবাই মৃত। সব শেষ হয়ে যাবার পরে বিমল বল্পে—এ্যালিস্, এখন কি করবে ? আর কি চীনে পল্লীতে যাবে এখন ? এ্যালিস্ বল্লে—যেতাম কিন্তু এই যে বোমা-ফেলা হয়ে গেল, এর শোরগোল অনেক দূর পৰ্য্যন্ত গড়িয়েছে তো। কনসেশনের সবাই আমাদের জন্যে চিস্তিত হয়ে পড়বে। সুতরাং চলো ফেরা যাক । কিছুদূরে যেতেই দেখলে হাসপাতালের এ্যাম্বুলেন্স ছুটোছুটি করছে। চীনা গবর্নমেন্টের এ্যান্টি-এয়ারক্র্যাফট, কামানগুলো চারদিক থেকে ছোড়া হতে লাগলো—কিন্তু তখন জাপানী বিমান কোথায় ? আকাশের কোনো দিকেই তার পাত্তা নাই। ওরা কনসেশনে ফিরে এল। স্বরেশ্বরের কাছে বিমল খুব বকুনি খেল, তাকে ফেলে যাওয়ার জন্যে । এ্যালিস্ বল্লে—ওকে বকচো কেন—অামি ভেবেছি আজ বিকেলে আবার চীনাপাড়ায় যাবার চেষ্টা করবো। তুমি চলো না, সুরেশ্বর ? এবার ওদের সঙ্গে অার একটি মেয়ে যাবে বল্পে। এ্যালিসের সঙ্গে পড়তো, নাম তার মিনি—মিনি বেরিংটন । বিকেলে ওর ট্যাক্সি আনালে। ওদের ট্যাক্সি কনসেশনের গেট, পৰ্য্যস্ত এসেছে—এমন সময় একজন তরুণ চীনা সামরিক কৰ্ম্মচারী ওদের ট্যাক্সিখানা থামালে। বল্লে—আপনার কোথায় যাবেন ? বিমল বল্লে—শহর বেড়াতে । —যাবেন না। আমরা গুপ্ত খবর পেয়েছি, জাপানী যুদ্ধজাহাজ বন্দরের বাইরের সমুদ্র
পাতা:বিভূতি রচনাবলী (নবম খণ্ড).djvu/১২৪
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।