বিভূতি-রচনাবলী واما لا যুবক হাসিমুখে বঙ্গে—ফটো নেবে বুঝি ? অালো নেই মোটে—ফটো উঠবে ? এ্যালিস এই সময় মন্দিরের বাইরের ফুলের দোকান থেকে একরাশ ফুল কিনে নিয়ে এল । বৃদ্ধ লি’কেও সে ডেকে এনেছে বাগান থেকে। হাসিমুখে বল্লে—ড্যাডি, এই ফুল নিয়ে ওদের আশীৰ্ব্বাদ করুন—তোমরাও সবাই ফুল নাও । যুবকের সঙ্গে প্রোফেসর লি চীনা ভাষায় কি কথাবার্তা বলেন, তারপর সকলে অৰ্দ্ধচক্রাকারে ঘিরে দাড়ালো নবদম্পতীকে । প্রোফেসর লি চীনা ভাষায় গম্ভীর স্বরে কয়েকটি কথা উচ্চারণ করে ওদের ওপর ফুল ছড়িয়ে দিলেন—তারপর সকলে ফুল ছড়ালে ওদের ওপর। এ্যালিস ও মিলির কি হাসি ফুল ছড়াতে ছড়াতে । তরুণ-তরুণী অবাক হয়ে দাড়িয়ে রইল । বিমল একবার চারিদিকে চেয়ে দেখলে –সন্ধ্যা নেমেছে। কোথাও আর রোদ নেই— এই পবিত্র, প্রাচীন ফ-চিন মন্দির, পাইন বন, লাল মাছের চৌবাচ্চা, শাস্ত গভীর সন্ধ্যা—এই কলহাস্যমুখর বিদেশিনী মেয়ে দুটি,–এই নবদম্পতী। দেখে মনেও হয় না এই পবিত্র স্থানের তিন মাইলের মধ্যে মানুষ মানুষকে অকারণে নিষ্ঠুর ভাবে হত্যা করেছে বিষবাষ্প দিয়ে, বোমা দিয়ে, কলের কামান দিয়ে। যুদ্ধ বৰ্ব্বরের ব্যবসায় । অথচ এই হাসি, এই আনন্দ, তরুণ দম্পতীর কত আশা, উৎসাহ ! এ্যালিস ঠিকই বলেছে। সব যাবে—কাল সকালেই হয়তো যাবে, জাপানী বোমায়। পবিত্র ফা-চিন মন্দির যাবে, পাইন গাছের সারি যাবে, লালমাছ যাবে, এই তরুণ দম্পতী যাবে, সে যাবে, মিনি, এ্যালিস, স্বরেশ্বর, বৃদ্ধ লি—সব যাবে। যুদ্ধ বৰ্ব্বরের ব্যবসায় । ফুল ছড়ানো শেষ হয়েছে! মন্দিরের বাকানো ঢালু ছাদে পোষা পায়রার দল উড়ে এসে বসেছে। পাথরের সিড়ির ওপরের ধাপট ফুলে ভৰ্ত্তি । নবদম্পতী তখন হাসছে—এ একটা ভারি অপ্রত্যাশিত আমোদের ব্যাপার হয়েছে তাদের কাছে । ওদের হাসি ও আনন্দ যেন দানবীয় শক্তির ওপর,—মৃত্যুর ওপর,—মামুযের জয়লাভ । মহাচীনের নবজন্ম হয়েছে এই তরুণ-তরুণীতে। স্বর্গ থেকে ফা-চিন-এর পবিত্র অমর আত্মা ওদের আশীৰ্ব্বাদ করুন। এ্যালিস এসে বিমলের হাত ধরলো । —চল ঘাই বিমল। হাসপাতালে ডিউটি রয়েছে—তোমার আমার এক্ষুনি— 帶 傳 嘯
পাতা:বিভূতি রচনাবলী (নবম খণ্ড).djvu/১৭৯
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।