মহীন্ আমার দিকে অবাক্ হয়ে চেয়ে থেকে বল্লে—ননী বলেচে বুঝি? সব মিথ্যে কথা ওর বাবু, সব মিথ্যে।
আমি কড়াসুরে বল্লাম—ঝগড়া হয়েছিল তাহোলে? সত্যি বলো!
মহীন্ চুপ করে রইল অনেকক্ষণ, তারপর আস্তে-আস্তে বল্লে—হয়েছিল বাবু, কিন্তু আমার তাতে কোনো দোষ…
—আমি সে-কথা বলি নি—ঝগড়া হয়েছিল কিনা জিগ্যেস করচি।
—হ্যাঁ বাবু।
—কি নিয়ে ঝগড়া হয়েছিল, বলো এবার!
—সোনার দর নিয়ে বাবু।
—আচ্ছা, তুমি শ্রীগোপালের কাছে ননী ঘোষের তাবিজ গড়ানোর কথা এইজন্যে বলেছিলে—কেমন, ঠিক কিনা?
—হ্যাঁ বাবু।
—তুমি তখন ভেবেছিলে যে, ননী ঘোষই খুন করেচে?
—তা—না—
—ঠিক বলো।
—না বাবু।
—তাহোলে তুমিও যে দোষী হবে আইনত; তাই ভাবচো বুঝি?
মহীন্ সেকরা ভয়ে ঠক্ঠক্ ক’রে কাঁপতে লাগলো, বল্লে—বাবু, তা—তা—
—তোমাকে গ্রেপ্তারের জন্যে থানায় খবর দেবো!
মহীন্ আমার পা জড়িয়ে ধরে বল্লে—দোহাই বাবু, আমার সব কথা শুনুন আগে। আপনি দেশের লোক—আমার সর্ব্বনাশ করবেন না বাবু—কাচ্চা-বাচ্চা মারা যাবে।
—কি, বলো!
—তখন আমিও লুটের টাকা ব’লে সন্দেহ করিনি। কি ক’রে করবো! বলুন বাবু, তা কি সম্ভব?
—তবে, কখন সন্দেহ করলে?
—বাবু, শ্রীগোপালই আমায় বল্লে, আপনি ননী ঘোষকে সন্দেহ করেন। তখন আমি ভাবলাম, গহনার কথাটা প্রমাণ না করলে আমি মারা যাবো এর পরে। তাই বলেছিলাম।
শ্রীগোপালের নির্ব্বুদ্ধিতা দেখচি নানা দিক থেকে প্রকাশ পাচ্ছে। যদি ওর বাবার খুনের আসামী ধরা না পড়ে, তবে সেটা ওর নির্ব্বুদ্ধিতার জন্যেই ঘটবে।